Shadow

পথ শিশু ও মাদক (২য় পর্ব )

এমদাদ হোসেন সজীব,স্টাফ রিপোর্টার:
রাস্তায় চলার পথে অনেক পথ শিশুর সাথে দেখা হয় আসলে সত্যের পিছনে দোড়ালে জানা যাবে এরা কিন্তু কোননা কোন এক সময় কারো সন্তান ছিলো হয়তোবা তাদের বাবা মা হারিয়ে গেছে বা তাদের বাবা-মাই তাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছে যার কারনে তারা আজ পথ শিশু । আমরা প্রবাদ বাক্যে বলি ‘‘বন্যেরা বনে সুন্দুর; শিশুরা মাতৃক্রোড়ে সুন্দর’’। আমরা মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে প্রকৃতির সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করি। তবে প্রকৃতির বাইরে সামাজিক সুযোগ সুবিধা গ্রহণ ও প্রদানের ক্ষেতে বেশ কিছু বৈষম্য রয়েছে। সামাজিক বৈষম্যের শিকার এমন মানুষেরা একাকি পথে প্রান্তে ঝড়-বৃষ্টির মাঝে খেয়ে না খেয়ে রাত যাপন করে। এদের মধ্যে অনেকে পাগল, শারীরিক প্রতিবন্ধি ও অতিদারিদ্র তারাও সমাজে মানুষ হিসাবে পরিচিতি। এই মানুষ সমাজেই অবহেলিত মানুষগুলো কোন ওভার ব্রীজের নীচে, রাস্তার ধারে, ট্রেন লাইন ও বাস স্টেশনে কিংবা হাটখোলায় কোন ঘুপচি ঘরে বসবাস করেন। আমরা যাদের টোকাই, বস্তির শিশু বা পথ শিশু বলে থাকি।
আমাদের অউন্নয়নশীল দেশে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা কাছে সৃষ্টির সেরা এই অবহেলিত মানুষগুলোর কোন সামাজিক মর্যাদা নেই। তাদের ঘরে জন্ম নেয়া শিশু-কিশোরদের কোন ভবিষ্যতে নাই। পথ শিশুরা সমাজের এক শ্রেণীর মানুষের কাছে নানা নির্যার্তন সহ্য করে করুন জীবন যাপন করেন। পথ শিশুদের পারিবারিক বন্ধন বলে কিছু নেই। বাবা-মায়ের স্নেহ মমতা তাদের কপালে কখনো জোটে না। অভিভাবকহীন এসব শিশু নিজের সিদ্ধান্তে জীবন চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। পারিবারিক বন্ধনহীন জীবন যাপনে অভ্যস্ত শিশুদের মাদকব্যবসায়ীরার টার্গেট করে মাদকের জালে বন্দি করে ফেলে। এসব শিশুদেরমাদক ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে সহযোগীতা করেন। বিনিময়ে শিশুরা একস্থান হতে অন্য স্থানে খর্দেরের কাছে মাদক পৌছে দেন।
আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম; দেশের কর্ণধার শিশু-কিশোরদের শৈশবে যখন বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাবার কথা ও খেলাধুলার মাধ্যমে নিজের মনকে বিকশিত করা। অথচ সেই মূখ্য সময়ে এই শিশু-কিশোরদের এক তৃতীয়াংশ আজ আর্থ-সামাজিক, পারিবারিক দারিদ্রতার কারণে নিজের ভাল মন্দ না বুঝেই নানামুখী ঝুঁকিপুর্ন শ্রমের সংগে জড়িত হয়ে পড়েন। এভাবে শিশু-কিশোররা অর্থনৈতিক লোভে নিজের শরীরের উপর জলুম করে হলেও ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিজেকে নিয়োজিত করে। যারা শিশু তাদের দ্বারা যে কোন ধরণের কাজকর্ম করাই হলো ঝূঁকিপুর্ণ শ্রম। যদিও ক্ষেত্র বিশেষ নানারকম কাজে শিশুরা নিয়োজিত থাকে। তদ্মধ্যে যেসব শিশু-কিশোর মাদক সরবরাহের মত মরণ নেশার ঝূঁকিপুর্ণ শ্রমে জড়ায়ে পড়ে তারা সমাজেকর অবহেলিত পথ শিশু বা বস্তির শিশু। সুবিধাভোগী মাদকব্যবসায়ীদের সংগে যে সমস্ত শিশু-কিশোর জড়িত থাকেন; তারাও একদিন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। এক্ষেত্রে যখন তাদের কাছে মাদক থাকে না তখন আঠা ও কালি মোচনের রাসায়নিক পদার্থ (হোয়াই ফ্লুইড) মাদক হিসেবে গ্রহণ করেন। এসব শিশুরা অনেকে মাদকের ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে জানে না। আর যখন তারা জানতে পারেন ততদিন পথশিশুদের মাদক গ্রাস করে ফেলে। মাদককে আসক্ত হয়ে যখন তাদের চিকিৎসা নেয়ার মত টাকা থাকে না তখন করুন মৃত্যু ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *