Shadow

ভোলার বাজারে আখের ভালো দাম পাওয়ায় হাঁসি ফুটে উঠেছে কৃষকদের মুখে

শরীফ হোসাইন, ভোলা ॥ ভোলার আখ চাষিরা গত দুই বছর লাভের মুখ দেখেননি। জোয়ারের পানিতে ক্ষেত তলিয়ে যাওয়া, বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণের কারণে আখ চাষ করে তাদের ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছিল। তবে এবছর ভোলায় আখের ব্যাপক ফলন হওয়ায় বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। ক্ষেতে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় আখের ব্যাপক ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে বাজারে আখের ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটে উঠেছে কৃষকদের মুখে।
জানা গেছে, এবছর ভোলার সাত উপজেলায় ৭শ’ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া আনুকূলে থাকায় ক্ষেতে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ তেমন না হওয়ায় আখের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এখন প্রতিদিনই সকাল থেকে উৎসাহ নিয়ে ক্ষেত থেকে আখ কেটে বিক্রি করছেন কৃষকরা। বাজারে আখের ভালো দাম হওয়ায় কৃষকরা বেশ আনন্দিত।
ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মো. দুলাল আহমেদ জানান, তিনি এবছর ৩২ শতাংশ জমিতে আখের চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৪০ হাজার টাকার আখ বিক্রি করেছেন। তিনি আরও ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার আখ বিক্রি করতে পারবেন।
কৃষক মো. জাকির হোসেন জানান, গত দুই বছর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া, রোগ ও পোকামাকড়ের কারণে আখ চাষ করে লোকসান হয়েছে। এবছর ক্ষেতে জোয়ারের পানি, রোগ ও পোকামাকড়েরর আক্রমণ তেমন নেই। তাই আখের ব্যাপক ফলন হয়েছে। এবছর আখ চাষ করে আমরা কৃষকরা অনেক লাভবান হব। কৃষক মো. নিজাম জানান, তিনি গত ৫ থেকে ৬ বছর ধরে আখের চাষ করে আসছেন। কিন্তু বাজারে আখের ভালো দাম তিনি ওই বছরগুলোতে পাননি। কিন্তু এবছর মৌসুমের শুরুতেই আখের দাম বাজারে বেশ ভালো। এতে তিনিসহ অন্যান্য কৃষকরা অনেক খুশি।
এই ইউনিয়নের পাতা বেড়িয়ে গ্রামের কৃষক মো. শহিদ জানান, চলতি বছর সার ও কীটনাশকের দাম একটু বেশি হওয়ায় আমাদের সমস্যা হয়েছে। তবে যদি এবছর সার ও কীটনাশকের দাম কম হতো তাহলে আমরা বিগত বছরগুলোর লোকসান পুষিয়ে অনেক লাভবান হতাম।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসূল কবীর জানান, গত দুই বছর লোকসান হওয়ায় এবছর অনেক কৃষক আখ চাষে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। যার কারণে আখের আবাদও কম হয়েছে। তবে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া, রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকায় এবছর যারা আখ চাষ করেছেন তারাই সফল হয়েছেন। এদিকে চলতি বছর ভোলার সাত উপজেলায় আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৭শ’ ৬৫ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৭শ’ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৫ হেক্টর কম চাষ হয়েছে।