কমলনগরে গনপিটুনিতে ডাকাত নিহত,১৫০ গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা।

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে ৫ বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গণপিটুনিতে আবুল হোসেন নামের এক ডাকাত নিহত ও ডাকাতের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মুজিবুল হক মাঝি নামের এক গ্রামবাসী গুরুত্বর আহত হয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে কমলনগর উপজেলার চর কাদিরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে ডাকাতির ঘটনাগুলিকে পুলিশ চুরির ঘটনা বলে দাবী করে। এঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত দেড়শত জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে কমলনগর থানায় হত্যা মামলা রুজু করেছে। নিহত ডাকাত সর্দার আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন থানায় হত্যা, ডাকাতি, নারী নির্যাতনসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। আহত মুজিবুল হক বর্তমানে নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তার স্বজনরা জানান।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার রাত অনুমান ২টার দিকে নোয়াখালীর আন্ডারচর এলাকা থেকে ডাকাত সর্দার আবুল হোসেনের নেতৃত্বে ১৫/১৬ জনের একদল ডাকাত লক্ষ্মীপুর জেলার সিমান্তবর্তী চরকাদিরা এলাকায় ডাকাতি শুরু করে। এ সময় তারা ওই এলাকার আবদুর রবের বাপের বাড়ীর আবদুর রশিদের ঘরে, হোসেন আহাম্মদের বাড়ীতে তার ঘরে, সুফিয়ার বাপের বাড়ীর হাছানের ঘরে, নাছির আহাম্মদের বাড়ী ও সিরাজ মাঝির বাড়ীসহ ৫ বাড়িতে ডাকাতি করে। এ সময় ডাকাতদল ৫ বাড়ী থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয়। ডাকাতরা সর্বশেষ সিরাজ মাঝির বাড়ীতে ডাকাতি করে চলে যাবার সময় বাড়ির লোকজনের শোর চিৎকারে প্রতিবেশী মুজিবুল হক নামের একজন এগিয়ে আসলে ডাকাতরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। এ সময় চর্তুদিক থেকে গ্রামবাসী ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যাবার সময় আবুল হোসেন নামের এক ডাকাতকে গ্রামবাসী আটক করে গণধোলাই দিয়ে স্থানীয় গ্রামপুলিশের হাতে তুলে দেয়। সকালে খবর পেয়ে কমলনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুত্বর আহত ডাকাত আবুল হোসেন ও গ্রামবাসী মুজিবল হককে উদ্ধার করে প্রথমে কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত ডাক্তার ডাকাত আবুল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত মুজিবুল হককে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় চর কাদিরা ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ মনির হোসেন যায়যায়দিনকে জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ৫/৬টি বাড়িতে ডাকাতদল ডাকাতি করে চলে যাবার সময় স্থানীয় গ্রামবাসি ডাকাত সর্দার আবুল হোসেনকে ধরে গণধোলাই দিয়ে আমার হাতে তুলে দেয়। আমি বিষয়টি কমলনগর থানা পুলিশকে জানালে সকালে থানা থেকে পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোঃ সেলিম এসে ডাকাত আবুল হোসেনকে নিয়ে যায়। তাকে প্রথমে কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে শুনেছি।
চর কাদিরা ইউপি চেয়ারম্যান খালেদ সাইফ উল্যাহ জানান, আমার ইউনিয়নে ৫ বাড়ীতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কবির আহাম্মদ ডাকাতির ঘটনাগুলোকে চুরির ঘটনা দাবী করে বলেন, ৫ বাড়িতে ডাকাতির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব। তবে ডাকাত আবুল হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা না করায় পুলিশের এসআই মোঃ সেলিম বাদী হয়ে দেড়শত অজ্ঞাত গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

আরও পড়ুন

Thursday, June 8, 2023

সর্বশেষ