ইব্রাহীম খলীল, পাবনা জেলা প্রতিনিধি:শস্যভান্ডার খ্যাত আটঘরিয়া উপজেলা। এ উপজেলায় গ্রামে গঞ্জের মোঠো পথের চার দিকে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায় সাদা নীল মেঘের কোলে উঁকি মারে মাঠ ভরা সোনালী পাকা ধান। প্রতি বছর এ সময় পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধে মৃদূল হাওয়ায় দোল খায় কৃষকের হাসি। আর দল বেঁধে ঘোমটা পরা নববধুর ঢেকির পাড়ে চালের আটা ভাঙ্গার ধুম পড়ে যায়।
এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকের ঘামঝরা পরিশ্রমে মাঠ ভরা সোনালী ধানে ভালো দাম পাওয়ার আশায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। মাঠের নতুন ফসল ঘরে তুলতে কৃষাণ কৃষাণীর যেনো দম ফেলার সময়টুকোও নেই। সেকারণই মাঠ ভরা ধান কাটা ও মাড়াই কাজে ধান চাষীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অন্যদিকে ঢেঁকিতে পার দেওয়া, উঠোন ভরা সিদ্ধ ধান ভাঙা আটায় ভাপা পিঠা আর বাহারি খাবারের আয়োজনে ষড়ঋতুর দেশে চলছে এখন হেমন্ত। চিরাচরিত গ্রামবাংলায় নবান্ন উৎসবে মেয়ে -জামাইয়ের আগমণ যেনো প্রাণ ফিরে পায় গ্রাম বাংলার অবারিত কৃষাণ -কৃষাণীর কোল
আটঘরিয়ায় কার্তিক মাসের শুরুতেই কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে নতুন ধান। ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকেরা বেশ খুশি। কৃষকরা বলছেন জমি ফেলে রাখার চাইতে আগাম চাষ করে ঘরে তুলে সেই জমিতে রবি শস্য গম অথবা সরিষা চাষ করবেন। অগ্রহায়ণ মাসের শুরু থেকে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায়।
উপজেলার শ্রীকান্তপুর, সরকাগাড়ি ও ধলেশ্বরে আগাম চাষ করা ধানি গোল্ড ধান সবচেয়ে বেশি। চারা রোপণের ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে ধান ঘরে তুলতে পারার কারনে এই অঞ্চলের কৃষকরা ধানের চাষ করে আসছেন। এ ধানের ফলন বেশী হওয়ায় এর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক।
উপজেলার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে ২০ ভাগ জমির ধান পাকতে শুরু করেছে। কার্তিক মাসে এ অঞ্চলে মাঠে তেমন কাজ না থাকায় শ্রমিক সংকট নেই। এ কারণে মাঠে পেকে যাওয়া ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষক।
শ্রীকান্তপুর গ্রামের কৃষক নাজেমুদ্দিন বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে ধানি গোল্ড জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহে চারা রোপণ করে কার্তিক মাসের শুরুতেই ধান কেটে ঘরে তুলছেন। পাঁচ বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৩৪ হাজার টাকা। আশা করা যাচ্ছে কাটা মাড়াই শেষে ১২০ মন ধান ঘরে তুলবেন।
তিনি আরও বলেন, ধান কেটে জমিতে রবি শস্য গম অথবা সরিষা চাষ করবেন।