কমলনগর,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এক স্কুলছাত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে বখাটেরা উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে ওই ছাত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীসহ সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার মানববন্ধনও করেন। রেশমা আক্তার নামে হামলার শিকার ওই ছাত্রী উপজেলার হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমির সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী এবং চরজাঙ্গালীয়া এলাকার নুরুল আমিনের মেয়ে।
জানা যায়, গত ৪ মার্চ সকালে রেশমা আক্তার স্কুলে যাওয়ার পথে স্থানীয় আহমদ উল্যাহর বখাটে ছেলে আব্দুল খালেক, আব্দুর রহিম এবং তার ভাগিনা মনির ও তুহিন উত্ত্যক্ত করে। এর প্রতিবাদ করায় বখাটেরা তাকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় স্থানীয় ঘটনাস্থল থেকে তিন হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এবং রেশমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রাতেই রেশমার মা বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। কিন্তু ওই আসামিরা জামিনে এসে মামলা তুলে নিতে রেশমার পরিবারকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেন। এক পর্যায়ে আসামিরা ‘নাটক সাজিয়ে’ তাদের এক আত্মীয়কে দিয়ে ৬ মার্চ লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রেশমাসহ তার পরিবারের ১৪ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা করেন।
রেশমার পরিবারের সদস্যেদের অভিযোগ, উত্ত্যক্তকারীদের হামলার শিকার হয়ে মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আসামিদের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় রেশমার পরিবারকে হয়রানি করছেন। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে ওই ছাত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে রেশমা স্কুলে ক্লাসও করতে পারছেন না।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীসহ সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় হাজিরহাট বাজারে মানববন্ধন করেন। উপজেলা শিশু-কিশোর মেলা ও বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র আয়োজিত ওই মানববন্ধনে ছাত্রফ্রন্টের লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক নুরুল আলম, উপজেলা শিশু-কিশোর মেলার সংগঠক আকরাম হোসেন ও শিপন মজুমদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা বক্তারা স্কুলছাত্রী রেশমার ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবির পাশাপাশি রেশমাসহ তার পরিবারকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানান।