বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার নন্দীগ্রামে চোলাই মদ উদ্ধার নিয়ে আদিবাসী-পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের দাবি, আদিবাসীদের হামলায় থানার এসআইসহ ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। অন্যদিকে আদিবাসীদের দাবি, বিয়ের আয়োজন প্রস্তুতিকালে পুলিশের হামলায় নারীসহ ১১ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১৮ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করেছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দাসগ্রাম বৃন্দাবানপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। আহত পুলিশ সদস্য ও আদিবাসীদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দাসগ্রাম বৃন্দাবানপাড়ার আদিবাসী জাম্বু মাহাতোর দুই কন্যার বিয়ের প্রস্তুতি চলছিলো। বিয়ে উপলক্ষে আদিবাসী রীতি অনুযায়ী বর পক্ষের জন্য বাড়িতে চোলাই মদ তৈরী করে রাখে।
খবর পেয়ে ওই গ্রামে সুজন মাহাতোর বাড়িতে মাদক বিরোধী অভিযান চালায় থানার এসআই রেজাউল করিম, এএসআই মিন্টু সহ একদল পুলিশ। সুজনকে আটক করলে আদিবাসীরা তাকে ছিনিয়ে নেয়। এসময় পুলিশ-আদিবাসীরা বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আহত আদিবাসী নারীরা অভিযোগ করেন, বিয়ে উপলক্ষে আদিবাসী রীতি অনুযায়ী চোলাই মদ তৈরী করেছে জানালে পুলিশ সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ১০ দিনের এক প্রসূতিসহ নারীদের বেধরক মারপিট করে। এক নারীর হাত ভেঙে গিয়েছে।
থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আদিবাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন এসআই রেজাউল-১, রেজাউল-২, রফিকুল, এএসআই মিন্টু, আমিনুল, আল আমিন, কনস্টেবল সজল। আহতদের মধ্যে এসআই রেজাউল করিমকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আদিবাসীরা দাবি করেন, পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন প্রসূতি সখী সোনা, আদিবাসী বৃদ্ধা পুশনি, কাজলী, অন্তরা, মালতি, রেনু, ভক্তি, নয়নী, সাধন মাহাতো, আবির ও হরি। তাদেরকে স্থানীয়ভাবে এবং হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আদিবাসী সংগঠক অমিত হাসান বলেন, আদিবাসী রীতি অনুযায়ী চোলাই মদ তৈরী করেছিল তারা। অপরাধ থাকলে পুলিশ অপরাধী ধরবে। কিন্তু নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে কেন? আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলা দায়ের হয়নি।