Shadow

রামগঞ্জে অনৈতিক ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে থানার ঘোলঘরে শালিষ সমজোতা না হওয়ায় ব্যবসায়ী জেল হাজতে

মোঃ আরিফ হোসেন
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে অনৈতিক ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে মোঃ মনির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে ২৬ জানুয়ারী (বুধবার) সকালে জেল হাজতে প্রেরন করেছে রামগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের আঃ রব ড্রাইভারের বাড়িতে। এখবর উপজেলা ব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে জনসাধারনের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের আঃ রব ড্রাইভারের বাড়ির সোহাগ হোসেনের স্ত্রী ঝর্না বেগমের (২৮) সাথে রামগঞ্জ পৌরসভার মধুপুর গ্রামের হাজী রজ্জব আলী পাটোয়ারী বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে আমির হোসেনের সাথে পরকিয়া সম্পর্ক চলে আসছিলো। স্বামী সোহাগ বাড়িতে না থাকার সুযোগে প্রেমিক আমির হোসেনকে গত ২৩ জানুয়ারী রাতে নিজ বাড়িতে রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়ক সংলগ্ন (কালাম ভিলা)তে ডেকে নেয়। এসময় ঝর্নার দেবর মোঃ স্বপন চিৎকার দিলে পার্শ্ববর্তী ছায়েদ ড্রাইভার ও তার ছেলে মিঠু,সিরাজুল ইসলাম,আরমান,ফারুক,ইউসুফ,মনির সহ এলাকার লোকজন ছুটে এসে ঝর্না ও প্রেমিক আমির হোসেনকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে গনপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। সংবাদ পেয়ে রামগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমিক আমির হোসেনকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে ভর্তি ও দেবর স্বপনকে আটক করে থানা হাজতে নিয়ে আসে। পরেরদিন পুলিশ স্বপন ও আমিরের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা না নিয়ে অজ্ঞাত কারনে তাদেরকে থানা হাজত থেকে মুক্ত করে দেয় পুলিশ। এর পর ২৫ জানুয়ারী মঙ্গলবার রামগঞ থানার ঘোলঘরে ওসি তদন্ত কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাসের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের কথিত নামধারী পৌর কলচমা পাটোয়ারী বাড়ির তোফায়েল আহম্মেদের ছেলে ইয়াছিন নেতৃত্বে বিঘা মুন্সী বাড়ির কাউছার হোসেন সহ ১০/১৫ জনের দালাল চক্রের দিনভর দফায় দফায় শালিষী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ রাত ৯টায় উল্টো ব্যবসায়ী মনির হোসেনের কাছে শালিষ বৈঠকে ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দাবি করে পুলিশ ও দালাল চক্র। ওই ব্যবসায়ী টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় থানার ঘোল ঘরের শালিষ বৈঠক থেকে তাকে আটক করার নির্দেশ প্রদান করেন ওসি তদন্ত কার্তিক চন্ত্র বিশ্বাস। এরপর ২৬ জানুয়ারী বুধবার সকালে মিথ্যে মামলা দিয়ে ব্যবসায়ী মনিরকে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
বেলায়েত হোসেন নামের স্থানীয় এক যুবক জানান, রাত ১.৪৫মি চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে যাই। তাৎক্ষনিক পুলিশ আমির হোসেন ও স্বপন নামের ২জনকে নিয়ে গেছে। এর বেশী কিছু জানি না।
ঝর্নার বড় বোন মিলি বেগম জানান, ভুল বসত রাতে ঘরের মেইন গেইটের দরজা খোলা ছিলো। মনির একজন পুরুষকে মেরে আমাদের ঘরে ঢুকিয়ে আমার বোনকে বেদম মারধর করেন।
প্রেমিক আমির হোসেন গনপিটুনির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি বেশ অসুস্থ। এখন কথা বলতে পারবো না।
ব্যবসায়ী মনিরের স্ত্রী রিপাত আরা রিচি জানান, আমার স্বামী সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় ঝনার্র দায়ের করা মিথ্যে মামলা দিয়ে আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়ে।
রামগঞ্জ থানার ওসি মোঃ ইমদাদুল হক ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত (ওসি) তদন্ত কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস জানান, থানর ঘোলঘরে শালিষ বৈঠকে কোন সমজোতা না হওয়ায় ঝর্না বেগমের দায়ের করা মামলায় মনির হোসেনকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।