Shadow

রামগতি সরকারী পাইলটের প্রধান শিক্ষকের অবৈধ নিয়োগ ও বেপরোয়া দুর্নীতি

রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার মডেল সরকারী
পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের অবৈধ নিয়োগ এবং
স্কুলের সম্পদ তছরুপ, পিয়ন বা নৈশ প্রহরী নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফির নামে জামানত আদায়, স্কুলের ইট শুরকি দিয়ে বাড়ীতে ইমারত নির্মাণ, পানির দরে স্কুলের টিন, কাঠ, ইট, শুরকি বিক্রি করে অর্থ আতœসাতহর নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ (ইআইএন-১০৭১৩১) স্থানীয় প্রভাবশালীদের
মাধ্যমে চরম অনিয়মের মাধ্যমে নিয়োগ লাভ করেন। অনিয়মের মধ্যে নিয়োগ পেয়ে তিনি মেতে উঠেন চরম দুর্নীতিতে। তার সময়ে স্কুলটি পরিণত হয় ব্যবসা কেন্দ্রে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ্যসাইনমেন্টের নামে প্রতি বিষয়ে ২০ টাকা করে আদায় আবার সেই কাগজ খোলা বাজারে বিক্রি করে অর্থ আাতœসাৎ
সহ নানান লুটপাটে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠে প্রধান শিক্ষক কালামের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি তার এ সকল অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে একই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক বদরুল হোসেন শিক্ষামন্ত্রী, সচিব, ডিজি মাউসি, মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, জেলা প্রশাসক লক্ষ্মীপুর, উপজেলা
নির্বাহী অফিসার রামগতি সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম দায়িত্ব পালনকালীন বিগত ২৪ জুন, ২০১৫ তার কর্মজীবনের ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ায় স্বীয় পদটি শুন্য বলে গণ্য হয়। পরের মাসে কুমিল্লা বোর্ড ১৪ জুলাই, ২০১৫ তারিখে এ মর্মে একটি ছিঠি প্রেরণ করে যে কোন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে বর্ধিত করা যাবেনা। যার স্মারক নং- স্বীকৃতি/১১/ল²ী(৫৭৫)১। কিন্তু প্রভাবশালী মহল ক্ষমতা দেখিয়ে অবসরের ২ বছর পর অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালামকে নিয়োগ দেন। যে নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব করা হয় সাবেক প্রধান শিক্ষক আজিজুল ইসলাম ফিরোজকে। সূত্রমতে নিয়োগ কমিটিতে
যেখানে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সীল-সাক্ষর রয়েছে সেখানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সীল সাক্ষর রয়েছে। সচেতন সমাজ বিস্ময় প্রকাশ করেন, একজন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কিভাবে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সদস্য সচিব করে নিয়োগের সকল নথিপত্রে সীল ও সাক্ষর দিয়ে নিয়োগ
প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। আলেকজান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বিগত ০৪/১২/২০১৭ইং তারিখে নিয়োগে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন এবং সরকারি ও বে-সরকারি বেতন ভাতাদি গ্রহন করে আসছেন। বিদ্যালয়টি
২৩ সেপ্টেম্বর,২০১৮ তারিখে সরকারীকরণের নথিভূক্ত হয়। বর্তমানে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ইউএনও। সভাপতির স্বাক্ষরে তিনি বেতন ভাতাদি উত্তোলন করেন। যেহেতু তাঁহার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অবৈধ তাই তাঁহার সরকারি ও বে-সরকারি বেতন ভাতাদি স্থগিত করা আবশ্যক। তাছাড়া তিনি বিদ্যালয়ে
যোগদান করার পরই বিদ্যালয়ের ৯শত বর্গফুটের দ্বিতল ভবন ও টিনশেডের একটি
অফিস কক্ষ বিক্রি করে দেন। প্রায় শতাধিক ঢেউটিন, ৬০/৭০খানা লোহার বেঞ্চ, দরজা, জানাল, গ্রিল, ইট, গাছ, সরকারি বই ইত্যাদি বিক্রি করেন যার কোন টাকা স্কুল ফান্ডে জমা করেন নাই। এমনকি স্কুলের ইট দিয়ে তিনি নিজ বাড়িতে ঘর নির্মাণ করেন। এ্যস্যাইনমেন্ট বানিজ্যের নামে ৪ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা এবং মূল্যায়ন কাগজের ২২ হাজার আতœসাতের অভিযোগ করেন।
তিনি আরো দাবী করেন, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে নিয়োগ নেওয়ায় তাঁহার বেতনের সরকারি ও বে-সরকারি অংশ সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার দাবী করেন।
তিনি আরো জানান, স্কুল কমিটির সভাপতি, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ স্বংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করলে তারা তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে সকল প্রশ্নের উত্তর রয়েছে তদন্তকালে তা পেশ করবো। আমি কোন দুর্নীতি করিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত রির্পোট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।