Shadow

অস্বাভাবিক জোয়ারে কমলনগরে ২০ টি গ্রাম প্লাবিত।

কমলনগর,লক্ষীপুর প্রতিনিধি : মেঘনা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে  উপকূলীয় ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।

শতাধিক মাছের ঘের ও পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির খামার পানিতে ডুবে গেছে, মারা গেছে ৫ হাজার মুরগি। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় কাঁচা-পাকা রাস্তা, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চলতি মৌসুমের ধানসহ বিভিন্ন ফসল। এছাড়াও শত শত বসতঘরে পানি ঢুকে ক্ষতি হয়েছে আসবাবপত্র ও বিভিন্ন মালামাল।বছর পর বছর মেঘনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে মাইলের পর মাইল বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। নদীর তীরে ফের বাঁধ নির্মাণ না করায় অরক্ষিত হয়ে পড়ে কমলনগর  উপজেলা। বেড়ি বাঁধ না থাকায়  আজ বিকেলে পূর্ণিমার প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

মেঘনা নদীর জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের ছেয়ে ৬ থেকে ৮ ফুট বেড়ে যায়। এসময় তীব্র বাতাস ও স্রোতে নদীর  পানি ঢুকে পড়ে, মূহুর্তেই বিস্তীর্ণ জনপদ যেনো ‘সাগরে’ রূপ নেয়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে কমলনগরের  উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ।

অস্বাভাবিক জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাগুলো হলো কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি, মতিরহাট, চর সামচ্ছুদ্দিন, সাহেবেরহাট, চর মার্টিন, মুন্সিরহাট, চৌধুরী বাজার, কাদিরপন্ডিতেরহাট, চর মার্টিন, বলিরপুল, চর লরেন্স, নাছিরগঞ্জ, নোয়াহাট, চর ফলকন, মাতাব্বরহাট এলাকা, পাটারিরহাট।

এসব এলাকায় জোয়ারের পানিতে কোমর পর্যন্ত ডুবে গেছে। বসতঘরে উঠেছে হাঁটু পানি। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি আগে কখনো ঘটেনি বলে জানিয়েছেন এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা।এদিকে কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মো. ওসমানের ‘তাজ লেয়ার মুরগি খামার’ জোয়ারের পানিতে ৫ হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে তার প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন ক্ষতিগ্রস্থ খামারি। জোয়ারে ভেসে গেছে চর ফলকন গ্রামের হাজি সিরাজুল ইসলাম, মো. সফিউল্যাহ, আজাদসহ এলাকার ২৫টি পুকুুরের মাছ। তাতে তার ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এ ছাড়া  পাটারিরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিব হোসেন লোটাসের ঘেরের মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে অন্তত তিন লাখ টাকা। এভাবে উপকূলীয় প্রতিটি গ্রামে জোয়ার পানিতে পুকুর ও মাছের ঘের ভেসে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা জানান, প্রবল জোয়ারে তার এলাকার কাঁচা-পাকা সড়কের ক্ষতি হয়েছে। এখন ওই সড়ক চলাচল অনুপযোগী।

চর কালকিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফ উল্লাহ, ফলকন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী হারুন অর রশিদ বলেন, অস্বাভাবিক জোয়ারে ডুবে গেছে তাদের এলাকা, পানিতে তলিয়ে গেছে ফসল। রাস্তাঘাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফসল ও কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।খবর পেয়ে কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর, চর লরেন্স ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ হিরন ক্ষতিগ্রস্থ একটি মুরগির খামারসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।Aকমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি বলেন, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের শিকার। অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে বেড়িবাঁধ। বাঁধ না থাকায় জোয়ার এলেই প্লাাবিত হয় বিস্তীর্ণ জনপদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *