Shadow

আগামীকাল বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ৪৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী l

এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা ॥ ত্রিশ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ মা-বোনদের সম্ভ্রমসহ নাম না জানা অসংখ্য শহীদদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা যে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেলাম তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ৭ বীরশ্রেষ্ঠ। আর এই সাত বীরশ্রেষ্ঠদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ভোলার গর্ব বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল। আগামীকাল ১৮ এপ্রিল বুধবার ছিল তার ৪৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী। এ উপলক্ষে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের পরিবারবর্গ এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ভোলা শহরের আলীনগর ইউনিয়নের মোস্তফা কামাল নগর (মৌটুপী) ওয়ার্ডে অবস্থিত মোস্তফা কামাল গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের হলরুমে সকালে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
যেভাবে শহীদ হলেন ঃ ১৬ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য কুমিল্লা-আখাউড়া রেললাইন ধরে উত্তর দিকে এগুতে থাকে। ১৭ই এপ্রিল পরদিন ভোরবেলা পাকিস্তান সেনাবাহিনী দরুইন গ্রামে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের উপর মর্টার ও আর্টিলারীর গোলাবর্ষণ শুরু করলে মেজর শাফায়াত জামিল ১১ নম্বর প্লাটুনকে দরুইন গ্রামে আগের প্লাটুনের সাথে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন। ১১ নম্বর প্লাটুন নিয়ে হাবিলদার মুনির দরুইনে পৌছেন। সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল তার নিকট থেকে গুলি নিয়ে নিজ পরিখায় অবস্থান গ্রহণ করেন। বেলা ১১ টার দিকে শুরু হয় শত্রুর গোলাবর্ষণ। সেই সময়ে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। সাড়ে ১১টার দিকে মোগরা বাজার ও গঙ্গা সাগরের শত্রু অবস্থান থেকে গুলি বর্ষিত হয়। ১২ টার দিকে আসে পশ্চিম দিক থেকে সরাসরি আক্রমণ। প্রতিরার সৈন্যরা আক্রমণের তীব্রতায় বিহ্বল হয়ে পড়ে। কয়েক জন শহীদ হন। মোস্তফা কামাল মরিয়া হয়ে পাল্টা গুলি চালাতে থাকেন। তাঁর পূর্ব দিকের সৈন্যরা পেছনে সরে নতুন অবস্থানে সরে যেতে থাকে এবং মোস্তফাকে যাবার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাদের সবাইকে নিরাপদে সরে যাওয়ার সুযোগের জন্য মোস্তফা কামাল পূর্ণোদ্যমে এল.এম.জি থেকে গুলি চালাতে থাকেন। তাঁর ৭০ গজের মধ্যে শত্রুপক্ষ চলে এলেও তিনি থামেননি। এতে করে শত্রুপক্ষ সঙ্গীদের পিছু ধাওয়া করতে সাহস পায়নি। এক সময় গুলি শেষ হয়ে গেলে, শত্রু আঘাতে তিনিও লুটিয়ে পড়েন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *