Shadow

কমলনগরে উপাধ্যক্ষকে মারধর করলেন সহকারী শিক্ষক !

প্রয়াস নিউজ : উপাধ্যক্ষকে মারধর, ছাত্রদের উপর শারীরিক নির্যাতন ও অসদাচরণ, শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের সাথে আপত্তিকর আচরণ, একের পর এক মাদ্রাসার নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা এবং অধ্যক্ষের আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে চলেছেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ফরাশগঞ্জ ফয়েজে আম আলীম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবুল কাসেম। এতে ওই মাদ্রাসার স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম এবং মাদ্রাসার প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে।

এ বিষয়ে উপযুক্ত প্রতিকার চেয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওঃ তছলিম উদ্দিন। এ ছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা শিক্ষক আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে আলাদা আরো একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ দিকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহবুবুল হক মজুমদার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহসান উল্যাহকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

অভিযোগে জানা যায়, ফরাশগঞ্জ ফয়েজে আম আলীম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক আবুল কাসেম স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় সারাদিন এলাকার সালিশ নালিশ বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। এতে তিনি প্রতিদিন মাদ্রাসায় দেরি করে আসেন এবং মাদ্রাসার শ্রেণি কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগেই মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে যান। এ নিয়ে উপাধ্যক্ষ মাওঃ তছলিম উদ্দিন তার কাছে জবাব চাইলে তিনি উপাধ্যক্ষের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। পরে বিষয়টি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলী আকবরকে জানালে শিক্ষক আবুল কাসেম উপাধ্যক্ষ তছলিম উদ্দিনের ওপর আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

গত ১ আগষ্ট মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছিলেন উপাধ্যক্ষ মাওঃ তছলিম উদ্দিন। এ সময় হঠাৎ সহকারী শিক্ষক আবুল কাসেম উশৃঙ্খলভাবে ক্লাসে ডুকে টেবিলের উপর থাকা ছাত্র হাজিরাখাতা হাতে নিয়ে উপাধ্যক্ষের মাথায় ছুড়ে মারেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে পিটিয়ে ক্লাস থেকে বের করে দেন।

এর কিছুক্ষণ পর আবারো শিক্ষক আবুল কাসেম ক্লাসে ডুকে উপাধ্যক্ষের মাথা টেবিলের উপর চেপে ধরেন এবং তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে ক্লাস থেকে বের করে দেন। এর আগেও গত ১৫ ফেব্রুয়ারী তারিখে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষক আবুল কাসেম ক্লাসে ডুকে শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন এবং কয়েকজন ছাত্রীকে তার হাতে থাকা বেত দিয়ে বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে গুতো মেরে আঘাত করেন।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ আলী আকবর জানান, সহকারী শিক্ষক আবুল কাসেম মাষ্টার একজন বদমেজাজী এবং উশৃঙ্খল ব্যক্তি। তার কারণে মাদ্রাসার যাবতীয় শৃঙ্খলা ও পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পথে। তিনি বলেন, মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন মিটিংয়ে তাকে বার বার সতর্ক করা হলেও তার স্বভাব পরিবর্তন হয়নি।

এ ব্যাপারে কমলনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহসান উল্যাহ অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ইউএনও স্যার আমাকে অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এখনো তদন্ত কাজ শুরু হয়নি। চলতি সপ্তাহে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *