Shadow

জন্ডিস নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি ( Homeopathy for jaundice cure ) l

জন্ডিস নিরাময়ে হোমিওপ্যাথি:

সম্প্রতি জন্ডিস রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে সীমাহীন। এ রোগ দীর্ঘ স্থায়ী হলে যকৃতের অসুস্থ কোষ নষ্ট হয়ে যায়। যকৃতের কর্মক্ষমতা যাতে নষ্ট না হয় সে জন্যে রোগাক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথেই সঠিক চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। সাধারণত এ এবং বি ভাইরাসের কারণেই এটা হয়ে থাকে। এছাড়াও ভাইরাস ঘঙঘ ওঅহ এবং ঘঙঘ ওইহও কম দায়ী নয়। দুষিত পানি ও খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমেই ভাইরাস ‘এ’ বিস্তার লাভ করে। ভাইরাস ‘বি’ দূষিত ও সংক্রমিত সিরিঞ্জ, সূচ ও রক্তের ট্রান্সফিউশানের মাধ্যমেও এটা বিস্তার লাভ করে। এছাড়াও চুম্ব,ন দৈহিক সংস্রব এবং মায়ের দুধও জন্ডিসের জীবাণু সংক্রমণের সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ক্ষুধা মন্দা, হাল্কা জ্বর, বমি বমি ভাব, শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেবে। ডান দিকে পাজরের নীচে ব্যথা অনুভব হবে, চোখ ও প্রস্রাব হলুদ আকার ধারণ করবে। নিশ্চয়তার জন্য সেরাম বিলিরুবিন পরীক্ষা করানো উচিত। কোন কোন সময় রোগের আপাত: লক্ষণ প্রথমে প্রকাশ পায়না। কিন্তু তলপেটে তীব্র ব্যথা অনুভব হয়। এমন অবস্থা অনেক সময় চিকিৎসকের জন্য বিব্রতকর হয়ে পড়ে। সিরিঞ্জ সুঁচ বা রক্তের ট্রান্সফিউশান থেকে সংক্রমণ হলে তার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে ক্রনিক হেপাটাইটিস, লিভার সিরোসি্স এবং পরবর্তীতে লিভার ক্যান্সার ইত্যাদি জটিল ব্যাধি হতে পারে। ভাইরাস ‘বি’ এর জীবাণু দীর্ঘদিন শরীরে থাকতে পারে। এন্টিজেন নামক এক বিশেষ পরীক্ষার সাহায্যে এ ব্যাপারে জানা যায়। একটি বিষয় মনে রাখা উচিত : রক্তে যখন সেরাম বিলিরুবিন এর মাত্রা ২ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম প্রতি ১০০ সিসি রক্তের উপরে যায় (যার নিয়মিত মাত্রা হচ্ছে ০ দশমিক ৩-১ মিলিগ্রাম প্রতি ১০০ সিসি রক্তে) তখন চোখ ও প্রস্রাবের রং হলদে হয়। রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রথমদিকে রক্ত পরীক্ষা করলে সেরাম বিলিরুবিন এর চেয়ে বেশি না হতে পারে। এ অবস্থাতে কিন্তু রোগমুক্ত বলা যেতে পারে না। দেখা গেছে, আক্রান্ত হওয়ার ১০/১৫ দিন পর মাত্রা বেড়ে গেছে। অনেকেই মাত্রা বেশী দেখে ডাক্তারের অগোচরে ঘন ঘন রক্ত পরীক্ষা করে থাকেন। এটা কিন্তু কোনমতে উচিত নয়। বার বার রক্ত পরীক্ষা অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। জন্ডিস রোগীকে ঔষধের চাইতেও কিন্তু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। অবশ্য প্রথম দিকে যখন জ্বর থাকে, খাওয়ার অরুচি আর বমির ভাব দেখা দেয় তখন গ্লুকোজ মিশ্রিত খাদ্য দেয়া প্রয়োজন যাতে দুর্বলতা প্রতিহত হয়। চর্বি জাতীয় খাদ্য পরিহার করে বেশী পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু দেখা যায়, রোগীকে অনেক সময় খেতে দেয়া হয় না। গ্লুকোজ এককভাবে খাবারের প্রয়োজন মেটাতে পারে না। বরং বেশী হলে ভমির ভাব হয়। সুষম খাদ্যের অভাবে রোগী দুর্বল হয়ে পড়লে নিরাময় হতে দেরী হয় এবং নানা উপসর্গ দেখা দেওয়ার আশংকা থাকে। অনেকের ধারণা জন্ডিসে মাছ মাংস ও তৈল খাওয়া নিষেধ। কিন্তু এর কোন বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি নেই। লিভারের দুর্বলতার কারণে চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করাই শ্রেয়। ফল, ফলের রস, ভাত, মাংস, মাছ, ডাল, শাক-সবজী, আম, আমের রস, গ্লুকোজের সরবত, ডাবের জল, কলা, পেপে এসব রোগীকে খাওয়ানো উচিত। খাওয়ার জল ফুটিয়ে খাওয়ানো ভাল। প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কৃত হলেও দামের দিক দিয়ে অনেকের নাগালের বাইরে। সিরিঞ্জস, সূঁচ ইত্যাদি ১৫/২০ মিনিট সিদ্ধ করে ব্যবহার করা প্রয়োজন। তাছাড়া উওঝচঙঝঅইখঊ ঝণজওঘএঊ ব্যবহার করা ভাল। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতেই হবে।  উদাসীনতা বা অবহেলা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে ফেলে। তাই সচেতনতা রোগ উপশমে ও প্রতিরোধে সহায়ক।

হোমিওপ্যাথিক প্রতিবিধান : জন্ডিসে হোমিওপ্যাথিক ব্যবস্থাপত্র ও ঔষধের প্রয়োগ সংকেত বিশেষ গুরুত্ব। বহন করে। স্বল্প মূল্যে এবং প্রচন্ড শক্তিশালী ও স্বল্প সময়ে এর প্রতিবিধান রয়েছে এবং জন্ডিস বারে বারে হওয়ার প্রবণতাকেও রোধ করে। যদি দ্রুত এটা সারাবার পর পরবর্তীতে ধাতুগত লক্ষণের উপর মাঝে মাঝে গভীর ক্রিয়াশীল হোমিওপ্যাথিক সমূহ ব্যবহার করা হয়। জন্ডিসে যে ঔষধগুলো বেশী ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে (১) নাক্স, (২) লাইকো, (৩) মার্কসল, (৪) চেলিডোনিয়াম উল্লেখযোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *