নীলফামারী প্রতিনিধি।জলঢাকা শ্রমিক সংকট – বীজতলায় কোল্ড ইনজুরি রোগে আক্রান্ত – পর্যাপ্ত পানি স্বল্পতা ও মৌসুমী চাষাবাদকৃত ফসলাদির দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধি সহ নানানবিদ দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে মৌসুমী ফসল ইরি-বোরো চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছে নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার কৃষককুল। শুধু যে উপরুক্ত সমস্য তাও নয় অন্যদিকে স্বয়ং কৃষককুল নিজেই পরিবার পরিজন নিয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন মৌসূমী ফসল চাষাবাদে। সম্প্রতি এই সময়ে এ অঞ্চলের মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে দিনাতিপাত করছে। এরই ধারাবাহিকতায় অধিক মুনাফা অর্জনের জন্য সিংহভাগ কায়িক শ্রমিক পাড়ি জমিয়েছেন সুদুর দক্ষিন অঞ্চলে। ফলে এ অঞ্চলের কৃষক খানিকটা কোণঠাসা হয়ে পরেছেন। তীব্র শৈত্য প্রবাহ্ ও কুয়াশাচ্ছন্য শীতকে অপেক্ষা করে কৃষকরা তাদের চাষাবাদ কার্যক্রম অব্যহত রেখেছেন। উপজেলা কৃর্ষি সম্প্রসারন অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসূমে চাষাবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫ শত ২৫ হেক্টর জমিতে। তবে কৃষককুলের দাবী কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের নির্ধারিত চাষাবাদের জন্য যে লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে তার চেয়ে অধিক জমিতে ফসল ফলাবে কৃষক। কিন্তূ দুঃখের বিষয় সে চাষাবাদকৃত ফসল কৃষকের ঘরে পূর্নাঙ্গ উঠবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এছাড়া প্রচুর পরিমানে চারা সংকট হওয়ায় বিপাকে পরেছেন কৃষক। ফলে এবার ইরি-বোরো মৌসূমে তুলনার চেয়ে কম ধান উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের কৃষক মনোরঞ্জন রায় জানান, পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় ১২ থেকে ১৫ শত টাকা বিঘা প্রতি ব্যয় নির্ধারন করে জমিতে ফসল ফলাতে হচ্ছে। তিনি জানান শ্রমিক সংকটের কারনে কৃষককে অধিক টাকা গুনতে হচ্ছে। পর্যাপ্ত শ্রমিক সরবরাহ থাকলে এত টাকা লাগতো না। কালিগঞ্জ বঙ্গবন্ধু এলাকার কৃষক আলতাব হোসেন বলেন, ৫ বিঘা জমির জন্য বীজ ফেলিয়ে ছিলাম। তীব্র শৈত্য প্রবাহ্ ও ঘন কুয়াশার কারনে সে বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সম্ভাবত্ব এই চারা দ্বারা ২ বিঘা জমিতে রোপন করা যাবে। তাও হয় কি না সন্দেহ।কি আর করা বাকী জমিতে অন্য ফসলাদি চাষাবাদ করতে হবে। বালাগ্রাম ইউনিয়নের মন্তের ডাঙ্গা এলাকার কৃষক শ্রীকান্ত মোহন জানান, গরিব মানুষ বাড়ির পার্সবতি জমি ও বর্গা চাষি হিসাবে চাষাবাদ করি। হামার তো গরু মহিষ ও টাকা নাই যে হাল বোয়ামো।তাই বাধ্য হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে জমিতে নেমে পরেছি। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কি আর বলি ভাই পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করলেও মই দিতে হয়। এছাড়া তেল, কিশান, সার ও দেখভাল করতে হয়।সব মিলিয়ে চাষাবাদে এখন অনেক ব্যয়। এর পরেও চাষ করি দুটি পয়সা অর্জনের জন্য। এ বিষয়ে উপজপলা কৃষি অফিসার শাহ্ মুহাম্মাদ মাহাফুজুল হক বলেন, চলতি ইরি-বোরো মৌসূমে চাষাবাদের জন্য যে লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে এর মধ্যে অনেক কৃষক এখনো পর্যাপ্ত চারা রোপন করতে সক্ষম হয়নি। এ পর্যন্ত মাত্র ৫ শত ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল ফলানো হয়েছে।