এরশাদ আলম,জলঢাকা (নীলফামারী)প্রতিনিধিঃকথায় আছে যাদের কেউ নেই,তার সহায়তা করেন সৃষ্টিকর্তা।সেও কিন্তু হয় কেউ না কারও মাধ্যমে।নীলফামারী জলঢাকায় চাঁদমনি অনাথ আশ্রমের-অনাথ কন্যাদের মামা হাজ্বী দুলাল।এমনেই একজন সাদা মনের মানুষের খবর পাওয়া গেছে তিনি হলেন হাজ্বী দুলাল।এই মানুষটি হলেন,এ অঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের ঝড়ে পড়া অনাথ কন্যাদের মাম নামে পরিচিত আলহাজ্ব পিজিরুল আলম দুলাল। হাজ্বী দুলালের হাতে গড়া নারী কল্যাণ সংস্থা আশ্রম “চাঁদমনি”। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এতিম শিশুদের নিয়ে এসে ঠাই দেন এবং সেখান থেকে বাদ পড়েনি হরিজন পল্লীর মেয়েরাও।এমন কি তার কাছে জাতির কোন ভেদাভেদ নেই।আবাসিক এবং অনাবাসিক সবমিলে ওই আশ্রমে ঠাই হয়েছে প্রায় ৫”শ ৩০ জন অনাথের। সোমবার বিকালে ঝড়বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ওই অনাথ আশ্রম চাদমনি” কন্যাদের দেখতে গিয়ে ৫০ জন শিশু কন্যার হাতে স্কুল ব্যাগ তুলে দিয়েছেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহঃ রাশেদুল হক প্রধান,থানা অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান, অনাথ আশ্রম চাঁদমনি’র প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আলহাজ্ব পিজিরুল আলম দুলাল।চাঁদ মামা”র আলোয় আলোকিত এবারের এসএসসি পরিক্ষার্থী বুলবুলি আক্তার জানায়,আমার গরীব পরিবারে জন্ম তাও আবার হারিয়েছি বাবা ও মাকে তাই পড়াশোনার খরচ যোগাতে না পাড়ায় ঝড়ে পড়েছিলাম অন্ধকারে।মামা আমাকে সেখান থেকে তুলে এনে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলেছেন। শুধু বুলবুলি নয় এই আশ্রমের যারা এসেছে তারা সকলেই ভূলে গিয়েছে তাদের পরিবারের কথা।পিতা মাতার আদর স্নেহ ভালবাসা কোনটাই কমতি পায়নি আশ্রয় দাতা হাজ্বী পিজিরুল আলম দুলালের কাছ থেকে। জলঢাকা পৌর শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দুরে চাওড়াডাঙ্গী গ্রাম এ আশ্রমটি অবস্থিত। যাদের বা কিংবা মা নেই, তাদেরই ঠাঁই এখানে। অবহেলিত এ অঞ্চলের কর্মহীন মানুষরা তাদের সন্তানদের স্কুলের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে না পারলেও হাজ্বী দুলাল এসব ঝড়ে পড়া কন্যা শিশুদের আপন করে নিয়েছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটার, সেলাই ও কুটির শিল্পের কাজ শিক্ষাদেন। বৈবাহিক জীবনে চাঁদমনি প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আলহাজ্ব পিজিরুল আলম দুলাল (৮৫) নিঃ সন্তান, কয়েক বছর আগে তার স্ত্রী মারা যায়। তাই এখন জীবনের সমস্ত জমানো সঞ্চয় নিজের কাজে ব্যয় না করে করছেন এতিম মেয়েদের পিছনে। যেন তারাও উচ্চ শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাথা উচু করে দাড়াতে পারে। ১৯৯৯ সালে মাত্র জন এতিম মেয়েকে নিয়ে শুরু হওয়া চাঁদমনি আশ্রমেটিতে এখন পর্যন্ত ঠাই হয়েছে প্রায় ৪”শ ৫০ জন।জীবন সংসারে সমস্ত চিন্তা চেতনা ধ্যান ধারণা তার আশ্রমের এতিম মেয়েরা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে আর প্রমাণ করে দিবে শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। পিজিরুল আলম দুলাল চাঁদমনি আশ্রমের পাশাপাশি রিক্সা/ভ্যানে খবরের কাগজ ও বিভিন্ন লেখকের বই নিয়ে ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার হিসাবে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুলোতে মানুষকে পড়তে উৎসাহিত করেন। সেই সাথে এই সাদা মনের মানুষটি প্রতিদিন খোঁজখবর নেন, কার বাড়ীতে খাবার নেই, কোথায় বাল্যবিয়ে হচ্ছে তা রোধে ওই বাড়িতে গিয়ে বোঝানোই যেন তার দায়িত্ব।গোটা উত্তরাঞ্চলে এরকম একটি নারী আশ্রম নেই। মানবতার সেবায় মানুষ মানুষেষ জন্য এ প্রবাদটি বাস্তবে তিনি রুপায়ীত করছেন। শুধু এতেই শেষ নয় ! বয়স্ক শিক্ষা, ফ্রি সেলাই শিক্ষা কেন্দ্র, মক্তব ও শরীরচর্চা সহ নানান উদ্যোগ তার। পিজিরুল আলম দুলাল জানান, মানুষের মধ্যে বৈষম্য না করে অসহায়দের পাশে থেকে সচেতনতামুলক কাজের মাধ্যমে দেশে পরিবর্তন আনতে হবে ।