ভোলা প্রতিনিধি ॥ ‘নামে জমে টানে’ প্রতিপাদ্য থাকলেও বাস্তবে প্রমাণিত হলো ভোলা সদরের ইলিশা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের শাহাজানের বেলায়। হত্যা মামলার আসামী ইলিশা ৫নং ওয়ার্ডের আজিজুল হকের ছেলে শাহাজান ওরুপে হানিফ ভোলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাফলতির কারণে এক মাসের উপরে জেলে রয়েছেন ইলিশা ২নং ওয়ার্ডের আজিজুল হকের ছেলে এবং ইলিশা নেছারিয়া মাদ্রাসার দপ্তরী মোঃ শাহাজান মুন্সী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০ মার্চ ১৯৯৭ সালে ঢাকার সবুজবাগ এলাকায় আপন বড় ভাই রফিকুল ইসলামের স্ত্রীর সাথে পরকিয়ার জের ধরে ছোট ভাই শাহাজান ওরুপে হানিফ তার ভাই রফিকুলকে হত্যা করেন। এই ঘটনায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জোসনা ওরুপে মানছুরা বাদী হয়ে সবুজ থানায় হত্যা মামলা করেন, মামলা নং-৭৮ ধারা ৩২০/৩৪। ওই ঘটনায় পুলিশ তখন শাহাজান ওরুফে হানিফকে গ্রেফতার করলে ৭ বছর কারাভোগ করে জামিনে এসে দুইবার কোর্টে হাজির হয়ে এর পর থেকে পলাতক রয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকতা তদন্তে হত্যার সাথে নিহতের স্ত্রী জোসনার সখ্যতা থাকায় জোসনা ও শাহাজান ওরুপে হানিফের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেন। জামিনে মুক্ত হয়ে দুইবার হাজির হয়ে এর পর থেকে পলাতক প্রধান আসামী শাহাজান ও জোসনা।
মামলার আসামী ভোলার বাসিন্দা হওয়ায় মামলাটি ভোলা থানায় আসলে ভোলা থানার এসআই কবির উকিল তদন্ত না করে গত ২৩শে অক্টোবর ২০২১ তারিখে নিরাপরাধ শাহাজান এর কর্মস্থল ইলিশা নেছারিয়া মাদ্রাসা থেকে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যায় বলে জানান শাহজাহানের পরিবার।
কারাগারে থাকা শাহাজানের মেয়ে শাহানজ বলেন, আমরা কবির দারগার কাছে গেলে তিনি আমাদের কোন কথা না শুনে এমন কি আমার বাবা কে কোন কথা বলতে না দিয়ে কোর্টে প্রেরণ করেন কবির দারগার গাফলতির কারণে আমার নিরঅপরাধ বাবা বিনাদোষে জেল খাটছেন এখনো। শাহাজান এর ছেলে কলেজ ছাত্র নকিব বিনাদোষে তার বাবা হত্যা মামলার জেল কাটছেন, তাদের পরিবারের মানহানি হইছে সেই ক্ষতিপূরণ দাবী করেন এবং মুক্তির দাবী জানান।
ঘটনার অভিযুক্ত শাহাজান ওরুফে হানিফের স্ত্রী জয়নব বিবি বলেন, ২৫ বছর আগে আমার ভাসুর রফিক হত্যা হইছে সেই মামলায় আমার স্বামী জেল খেটে বের হয়ে দুইবার হাজির হয়ে আর হইনি, তিনি পলাতক রয়েছেন। হত্যা মামলার আসামী শাহাজান দুই মেয়ে ও এক সন্তানের জনক। এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরো দায়িত্বশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সচেতন মহল।
দৈনিক ভোলার বাণী’র সম্পাদক মাকছুদুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত না করে একজন নিরঅপরাধ মানুষকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করলো, আসলে সেই ব্যক্তি দোষী না এখন তিনি জেল খাটছেন, মানহানি হলো, পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো এই দায় কি নিবে ?
এ বিষয়ে ভোলা সদর থানার এসআই কবির হোসেন বলেন, আসলে নামে মিল থাকায় এমনটা হয়েছে, তবে লোকটি নির্দোষ, তার ভাগ্য খারাপ।
ভোলা সদর থানার ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, নাম ঠিকানা সব এক হওয়ায় এমনটা ঘটেছে, তবে আমরা ইলিশা ফাঁড়ির এসআই ফরিদ উদ্দিনকে তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।