Shadow

পরমানু বিজ্ঞানী ড.এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

 জাতীয় ডেস্ক : আজ সোমবা দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব, এমএ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন, মহাজোটের শরীক দলসমুহসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি, ফাতেহা পাঠ ও জিয়ারত, স্মৃতিচারণ, মিলাদ মাহফিল ও গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ। এদিকে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া তাঁর মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে জনগণের কল্যাণে যে কাজ করে গেছেন জাতি তা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া তাঁর কর্মের জন্য শুধু আমাদের কাছে নন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে ড. ওয়াজেদ মিয়ার আদর্শ নতুন প্রজন্মের পাথেয় হয়ে থাকবে।
সকালে প্রয়াত বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যে দিয়ে দিবসের কর্মসুচি শুরু হবে বলে জানান তাঁর ভাতিজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তাজিমুল ইসলাম শামীম। সকালেই ফতেপুরের জয়সদন প্রাঙ্গনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের পর গরীবদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। পরে বিকেলে উপজেলা সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও সন্ধ্যায় প্রেসক্লাবের হলরুমে প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ওইদিন বিকেলেই বিজ্ঞানীর কবর জিয়ারত করবেন বলে জানান, উপজেলা জাসদ সভাপতি মীর মোহাম্মদ আলী মানিক।
বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফ্রেরুয়ারি লালদিঘীর ফতেহপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি তাঁর মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুনেসার চার পুত্র ও তিন কন্যার মধ্যে তিনি ছিলেন সর্ব কনিষ্ঠ। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিও পীরগঞ্জ থানার হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জিলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সালে ওই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-’৬২ শিক্ষাবর্ষে হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ‘ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদস্থ করা হয়।
তিনি ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তারও এখন স্ব স্ব ক্ষেত্রে সু প্রতিষ্ঠিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *