Shadow

পাবনায় জাতীয় পতাকার গার্ড অব অনার থেকে বঞ্চিত করে দাফন করা হলো মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দীন সরকারের মৃত দেহ l

পাবনা জেলা প্রতিনিধি : পাবনায় এক মুক্তিযোদ্ধাকে জাতীয় পতাকার বদলে বাঁশের চাটাইয়ে জড়িয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে।এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বেড়া পৌর এলাকার শহীদ আব্দুল খালেক স্টেডিয়ামে শনিবার মুক্তিযোদ্ধা তাহেজ উদ্দিন সরকারকে এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। এ সময় বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুব হাসান, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাসহ সকল পর্যায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার তাহেজ উদ্দিন সরকারের মৃত্যু হয়। বেড়া পৌরসভার সম্ভুনাথপুরে তার
বাড়ি। ইউএনও মাহবুব হাসান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের উপর দায়িত্ব দেওয়া ছিল মরহুমের গোসল করানোসহ যাবতীয় কাজকর্মের। “মুক্তিযোদ্ধারা কফিনে জাতীয় পতাকা দিয়ে মোড়ানো ছাড়াই গার্ড অব অনার প্রদানের জন্য প্রস্তুত করেন। পরে আমরা প্রশাসনের লোকজন যাওয়ার পর রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। “অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আমি নিজেও বিষয়টি লক্ষ্য করি নাই। পরে যখন বিষয়টি লক্ষ্য করলাম স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি ইসহাক আলীর কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।” আসলে ওই সময় কিছুই করার ছিল না, বলেন ইউএনও মাহবুব। তাহেজ উদ্দিনের পরিবার এবং স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা পতাকা না জড়ানোর বিষয়টি জানতে চাইলে বেড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সভাপতি ইসহাক আলী বলেন, “এটা তো সামান্য বিষয়, আপনাদের এত মাথাব্যাথা কেন। একটা ভুল হয়েছে তাই বলে এটা নিয়ে এত মাতামাতি কেন?” মৃত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মিলন হোসেন বলেন, “আমার বাবা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তার ভারত এবং বাংলাদেশের দুটি সনদ আছে।” ইসহাক আলী ইচ্ছাকৃত তার বাবাকে যথাযথভাবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ইসহাক আলী শুধু আমার বাবাকে নয়, দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের অমর্যাদা করেছেন। এই ঘটনার বিচার হওয়া প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদা
প্রদানের বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তিনবার ফোন দিয়ে জানতে চেয়েছেন গার্ড অব অনার
দেওয়ার সবকিছু ঠিক আছে কি না। “তিনি (ইউএনও) বলেছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সব ব্যবস্থা
করেছে। আপনি চিন্তা করবেন না।” বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক
সমালোচনা হচ্ছে। পাবনার গণমাধ্যমকর্মী তপু আহমেদ বলেন, “মাঝেমধ্যেই এই ধরনের কাজকর্ম আমাদের চোখে পড়ে। সবাই ভুল বা অনিচ্ছাকৃত ভুল বলেই পার পেয়ে যাচ্ছে, যা মোটেও কাম্য নয়।”
পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাধারণ সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে শুধু ভুল হয়েছে, দুঃখিত
বলে পার পাওয়া উচিত নয়। অবশ্যই শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তা না হলে বার বার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *