Shadow

ভরা মৌসুমে মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশের আকাল ॥ জেলেপাড়ায় হাহাকার l

আবদুুল মালেক; বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধিঃ ভরা মৌসুমের শুরুতেই ভোলা জেলার সীমান্তবর্তী মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে ইলিশ শূন্য হয়ে পড়েছে। ইলিশ না পেয়ে নদী থেকে প্রতিদিনই জেলেদের প্রায় শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে। ইলিশের আকালে উপকূলীয় এলাকার শতাধিক জেলে পল্লীতে চরম দুর্দিন নেমে এসেছে। ইলিশ আহরণের মৌসুমে ইলিশ না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটাছে জেলে, আড়তদার, দাদন ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবী শ্রমিকদের। দাদন নেয়া জেলেরা দাদন শোধ ও জীবন ধারনের চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়ছে। জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় ধারদেনা করে কোন মতে চলছে তাদের জীবন সংসার।
সূত্রমতে জানা গেছে, বছরের মে মাসে কিছুটা কম থাকলেও জুন মাসের শুরু থেকেই জেলেদের জালে ধরা দেয় রুপালি ইলিশ। এতে জেলে পাড়ায় আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। জেলেরাও সারা বছরের ধারদেনা পরিশোদ করে থাকেন। মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময় শেষে জুন মাস গিয়ে জুলাই শুরু হলেও কাঙ্খিত ইলিশের দেখা পাচ্ছে না জেলেরা। ইলিশের আশায় সারি সারি নৌকা ও ট্রলার নিয়ে নদীতে দিন-রাত জাল পেতে বসে থেকেও ইলিশের দেখা পাচ্ছে না জেলেরা। এতে খালি হাতে চরম হতাশা নিয়ে নদীর তীরে ফিরছে তারা।
এদিকে জেলেদের দাদন নিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন জেলেরা। মাছ জালে ধরা না পড়ায় জেলেরা মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। জেলেরা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল কিনে নদীতে নেমেছেন। কিন্তু দিন-রাত জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা চরম হতাশা নিয়ে তীরে ফিরছেন। হতাশায় এখন অনেক জেলেই নদীতে যাচ্ছে না। নদীর তীরে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার হাজার হাজার জেলে। অনেকেই এনজিও ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়ীতে যাচ্ছে না। বর্তমানে জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
সরজমিনে গিয়ে বোরহানউদ্দিন আলীমুদ্দিন ঘাট, খাসমহল ও দিদার মাঝি ঘাট এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের ভরা মৌসুম চলমান থাকলেও নদীতে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা জেলে সহ সবার মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। মাঝে মধ্যে ১/২ হালি ইলিশ ধরা পড়লেও এগুলো দিয়ে ট্রলারের তৈল খরচও উঠছে না জেলেদের। অনেক জেলে নদীতে ইলিশ না থাকায় নদীর তীরে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে।
মেঘনা নদীর আলম মাঝি, শাহাবুদ্দিন মাঝি, জুয়েল মাঝি ও তেতুঁলিয়ার আ: রহমান, মো: কামাল মাঝি সহ বেশ কয়েকজন জেলে জানান, নদীতে ইলিশ মাছ ধরা না পড়ায় চরম বিপাকে রয়েছে তারা। দিন-রাত নদীতে জাল ফেলে যে ক’টি মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে ইঞ্জিচালিত নৌকার তেল খরচও উঠছে না। দোকানে বাকী করে এবং দাদনদারদের কাছ থেকে কিছু টাকা দেনা করে কোন রকম সংসার জীবন চালায় তারা। নদীতে মাছ না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছে তারা।
এব্যাপারে বোরহানউদ্দিন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ.এফ.এম নাজমুস সালেহীন বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেলেদের জালে রুপালি ধরা পড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *