ভোলা প্রতিনিধি
ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বর্তমানে লালমোহন উপজেলার চরভুতা ইউনিয়নের ভুমি অফিসের পিয়ন আঃমালেক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নিজে এবং পিতা- মাতা,ভাই,বোন,ভগ্নিপতি,শশুর, শাশুড়ীসহ নামে-বেনামে ও প্রায় অর্ধশত একর জমি বন্দোবস্ত নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর বন্দোবস্ত নিয়েই খ্যান্ত হয়নি মালেক।পায়তারা চালাচ্ছে ভেলুমিয়া বাজার সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ চন্দ্রপ্রসাদ নদী ও খাল
ভরাট করার জন্য।
এদিকে ভুমি অফিসের পিয়ন মালেকের ভুমি জাল – জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৮ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন মোঃ আলী নামের এক ব্যক্তি।
মোঃ আলীর ওই আবেদনপত্র থেকে জানাগেছে যে,ভেলুমিয়া ইউনিয়নের কুঞ্জপট্রি মৌজার এস এ ৮৫ নং খতিয়ানের ১৩১১ নং দাগের ০.৬৬ শতাংশ জমির রেকর্ডীয় মালিকানা অংশে মোঃ আলীর পিতা- রুস্তম আলী মৃত্যুর পর ওয়ারিশ সুত্রে মালিক হয়ে দখলদার বিদ্যমান আছেন তারা। এমনকি ওই জমি পূর্ববর্তীর আমল থেকেও দখলদার ছিলেন।কালের আবর্তে ওই সম্পত্তি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে বি এস জরিপে সরকারি ০১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়া সত্তেও ২০০৪-২০০৫ সালে গোপনীয় ভাবে জয়নাল আবেদীন দপ্তরির ছেলে মালেক ভোলা সদর উপজেলা ভুমি অফিসে পিয়ন পদে চাকুরী করার সুবাদে তার শশুর চরভেদুরিয়ার মোজাম্মেল হক,শাশুড়ী মমেলা বেগম এর নামকরণে কুঞ্জপট্রি মৌজার ৩৭৭ নং এক খানা খতিয়ান খুলে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরেজমিনে দখল ও নদী ভরাটের জন্য বিভিন্ন ভাবে পায়তারা চালাচ্ছে। একই ভাবে তার পিতা, ভাই, বোন, ভগ্নিপতি এবং নামে বেনামে প্রায় ৫০ একর জমি পিয়ন মালেক বন্দোবস্ত নিয়েছেন।বন্দোবস্তীয় ৩৭৭ নং খতিয়ানের ১৩০০ নং দাগে নৌযান চলাচলের জন্য বিশাল খাল।১৩১১ নং দাগে নদী,১২৯২ দাগে চন্দ্রপ্রসাদ কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত চৌসাগার।১৩১২ নং দাগে নদী।১৩০৯ নং দাগে বাঁধের পার ও মাদ্রাসা,মসজিদ ও কিছু অংশ নদী।২৫২ নং দাগে খাল। তাই কোন ভাবেই ৩৭৭নং খতিয়ানে ভুমি বা নদী বন্দোবস্ত দেয়ার কথা না। কিন্তু মালেক জালিয়াতির মাধ্যমে এসব ভুমি বন্দোবস্ত নিয়েছে।
অপরদিকে এলাকাবাসীও ওই জমির বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ভেলুমিয়া চন্দ্রপ্রসাদ কো-অপারেটিভ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জুয়েল জানান,বিদ্যালয়ের জমি রেকর্ডিয় সম্পত্তি। এই জমি মালেক বন্দোবস্ত নিয়েছেন বলে আমাকে জানায়।কিন্তু সে তো এই জমি আইনগত ভাবে বন্দোবস্ত নিতে পারেনা। যদি নিয়েই থাকে তাহলে জাল জালিয়াতি করেই নিয়েছে।তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ভাবে মোকাবেলা করব।
ভেলুমিয়া ইউনিয়ন পরিষেদর প্যানেল চেয়ারম্যান মহসিন খান বলেন,মালেকের সাথে কয়েকটি পক্ষের সালিশ চলমান আছে।তার কাগজপত্র আমাদের দিতে বলেছি কিন্তু কিছু কিছু দিচ্ছে না।
অভিযুক্ত ভুমি অফিসের পিয়ন মালেক জানায়, ১৩১১ নং দাগের জমি নিয়ে আমার শশুরের সাথে স্থানীয় একটি পক্ষের সাথে মত বিরোধ আছে।আমি এবিষয়ে জিজ্ঞেস করার কারণে আমার উপর ওই পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এদিকে ভেলুমিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান,বাজার সংযোগ নদী /খাল যেন কোন ভাবেই ভরাট করা না হয়।এ নদীর উপর দিয়ে নৌযান দিয়ে রড, সিমেন্ট,সার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামালসহ গুরুত্বপূর্ণ পন্য পরিবহনের ফলে ব্যবসায়ীরা সহজভাবে মালামাল আনা নেয়া করতে পারে।তাই কেউ বন্দোবস্ত নিলেও যেন তা বাতিল করা হয়।