Shadow

ভোলায় ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসসহ ২২ পরীক্ষার্থী আটক ॥ বহিস্কার-৬২

শরীফ হোসিইন (চীফ রিপোর্টার), ভোলা ॥ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতির সময় ভোলায় ২২ পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে প্রশাসন। শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) ভোলা সদরের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালীন তাদের আটক করা হয়। এ সময় অসুদুপায় অবলম্বন করার দায়ে ৬২ পরীক্ষার্থীকে বহিস্কারও করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসসহ বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম রাত ৯টায় জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ভোলা জেলায় পরীক্ষার্থী ছিল ১৬ হাজার ৯শ’ ১২জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে ১২ হাজার ৯শ’ ৯৪ জন। পরীক্ষায় অসুদুপায় অবলম্বন করার কারণে ৬২ জনকে বহিস্কার করা হয়েছে। এদের মধ্য থেকে ২২ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খরক্ষাকারী বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে রেগুলার মামলা হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে কতটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস উদ্ধার করেছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেননি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর কাছ থেকে তথ্য নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন ফকির এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রাত ৯টার দিকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসুদুপায় অবলম্বন করার কারণে ২২ পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে রেগুলার মামলা প্রক্রিয়াধিন। এ সময় কতটি ডিভাইস উদ্ধার করেছেন এবং কোন নির্বাহী ম্যাজিষ্টেট ছিলেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি পুরো তথ্য না দিয়ে মোবাইল ফোনের লাইনটি কেটে দেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ আলমগীর হুসাইনও রাত ৯টার দিকে জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অভিনব উপায়ে তৈরি মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস সংযুক্ত করে জালিয়াতির সময় ভোলায় ২২ পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধে রেগুলার মামলা প্রক্রিয়াধীন।
আরো জানা গেছে, ভোলায় ১৮টি কেন্দ্রে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা সরকারী কলেজ কেন্দ্র থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার, সরকারী মহিলা কলেজ থেকে বহিস্কার-৪ এবং ৪জন গ্রেফতার, শহীদ জিয়া আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ১জনকে বহিস্কার, মাছুমা খানক স্কুল থেকে ১জন বহিস্কার এবং ১জন গ্রেফতার, ভোলা টাউন স্কুল থেকে ১জন গ্রেফতার, ভোলা পৌর বালিকা স্কুল থেকে ২জনকে গ্রেফতার, এ রব স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৪জনকে বহিস্কার, ভোলা পিটিআই থেকে ২ জনকে গ্রেফতার, ভোলা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ২জনকে গ্রেফতার, ওবায়দুল হক বাবুল মোল্লা স্কুল থেকে ২জনকে গ্রেফতার, চরনোয়াবাদ মুসলিম স্কুল থেকে ২জনকে বহিস্কার এবং গ্রেফতার-১, ব্যাংকের হাট কো-অপারেটিভ স্কুল থেকে ৫জনকে বহিস্কার, হালিমা খাতুন স্কুল (পরানগঞ্জ) থেকে ২জনকে গ্রেফতার, ঘুইংগারহাট স্কুল থেকে ৫জনকে বহিস্কার, জয়নগর স্কুল থেকে ১জনকে গ্রেফতার, বাংলাবাজার ফাতেমা খানম স্কুল থেকে ১জনকে গ্রেফতার, বাংলাবাজার ফাতেমা খানম ডিগ্রী কলেজ থেকে ১জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজনকে মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা (এমসিকিউ) চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত। প্রথম ধাপে রংপুর, সিলেট, বরিশাল বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে পরীক্ষার হলে বসেন চাকরি প্রার্থীরা। জেলাগুলো হলো- ভোলা, রংপুর, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার। এসব জেলায় মোট কেন্দ্র ৫৩৫টি আর পরীক্ষার কক্ষ ছিল আট হাজার ১৮৬টি।
প্রথম ধাপের পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন চাকরিপ্রার্থী। এ ধাপে বরিশাল, রংপুর ও সিলেট বিভাগের ৭২ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী- ৩ বিভাগের সরকারি প্রাথমিকে শূন্য পদ রয়েছে দুই হাজার ৭৭২টি। সেই হিসাবে প্রতি পদের বিপরীতে লড়েছেন ১৩০ জন। তবে কোটা সুবিধার কারণে নারী প্রার্থীরা নিয়োগের ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন।