Shadow

ভোলায় বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ ॥ জনবল, শয্যা এবং ঔষধ সংকটে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক-নার্সরা

শরীফ হোসাইন, ভোলা॥ দ্বীপজেলা ভোলায় শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডাজনিত নানা রোগে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেড়েছে। হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। এর মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। ভোলা সদর হাসপাতালে ২০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ২ শতাধিক শিশু রোগী। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অভিভাবকরা। এছাড়াও প্রয়োজনীয় জনবল, শয্যা এবং ঔষুধ সংকটে বাড়তি রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। হাসপাতালের সিঁড়ি এবং মেঝে জুড়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে শিশু রোগীদের।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) ভোলা সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে শিশুদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২০ শয্যার ওয়ার্ড। রোগীর চাপ সামাল দিতে না পেরে জরুরি ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ সেখানে অর্ধশত বেড বসিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। এরপরও রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এক একটি বেডে ৩ থেকে ৪ জন করে শিশু রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝে, চলাচলের পথ এবং সিঁড়ির নিচেও গাদাগাদি করে বসে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। এতে শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা।
চর মেদুয়া গ্রাম থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সিমা আক্তার জানান, গেলো রোববার তার দুই বছর বয়সী শিশু রিহানকে তিনি ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। রিহান নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে। হাসপাতালে বেড না পেয়ে তিনি সিঁড়ির নিচে বসে গত তিনদিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শহরের পৌর কাঁঠালির আকলিমা আক্তার সানজিদা জানান, গেলো রাতে তিনি ভোলা সদর হাসপাতালে তার দেড় বছর বয়সী শিশু মুনিয়াকে ভর্তি করান। মুনিয়া ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। হাসপাতালে বেড সংকট থাকায় তিনি মেঝেতে বসে তার শিশু কন্যার চিকিৎসা করাচ্ছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মু. মনিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে সাধারণ শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ২১০ রোগীর মধ্যে ১৮০ জন শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। স্ক্যানোতে ভর্তি আছে ২০ জন এবং ডায়রিয়া ওয়ার্ড আছে ১০ জন শিশু। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ১৮০ জন শিশুর জন্য আছে মাত্র দুটি নেবুলাইজার। এছাড়াও রয়েছে শয্যা, নার্স ও চিকিৎসক সংকট। তবে পুরোদমে শীত শুরু হলে শিশু রোগীর সংখ্যা কমে যাবে। তত্ত্বাবধায়ক আরও জানান, শীত শুরুর এই সময়ে শিশুদের প্রতি অভিভাবকরা সচেতন হতে হবে। যাতে করে শিশুরা কোনোভাবেই নিউমোনিয়া কিংবা ঠান্ডা রোগে আক্রান্ত না হয়, সেজন্য সবসময় শিশুদের নিরাপদে রাখতে হবে।