Shadow

ভোলার মাতৃনিলয় নার্সিং হোম এবং ডাঃ আফরোজা বেগমের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ l

ভোলা প্রতিনিধি ॥ ভোলা মাতৃনিলয় নার্সিং হোম এবং ডাঃ আফরোজা বেগমের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৭ জুন) দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ তুলে ধরেন ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মনিরাম এলাকার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন হাওলাদার।
তিনি লিখিত অভিযোগে জানান, গত ২০ মে হঠাৎ তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী সালমা বেগম অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম উকিল পাড়া (মুসলিম পাড়া) ডাঃ পারভিন আক্তার এর পরিচালনাধীন মাতৃনিলয় নার্সিং হোম এ নিয়ে আসেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স বলেন বাচ্চার অবস্থা আশঙ্কাজনক, তাই রোগীর সিজার করতে হবে। পরদিন ২১ মে সকাল ৯টার দিকে ডাঃ আফরোজা বেগম তার স্ত্রীর সিজার করেন। তারপর তার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু সকাল ১০টার দিকে তার স্ত্রী প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। তখন বর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, রোগীকে রক্ত দিতে হবে। রোগীকে ২ ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পর রোগীর অবস্থা আরও অবনতি হলে বর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরী ভত্তিতে বরিশাল নিতে হবে বলেন। তখন রোগীর আত্মীয়-স্বজনরা উপায়ন্তর না দেখে দ্রুত স্পীডবোড যোগে বরিশাল শেরে বাংলা হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। ওখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ নাহিদা হাসান সুপার এর নেতৃত্বে আরো ৩ জন চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগীর ব্যাথার কোন কারণ খুজে পাননি। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকরা পুনরায় সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ২৩ মে পুনরায় সিজার করান। এ সময় চিকিৎসকরা রোগীর পেট থেকে প্রায় ৪ ট্রে জমাট বাধা রক্ত বের করেন এবং দেখতে পান যে রোগীর জরায়ুতে একটি রগ কাটা ছিল। চিকিৎসকরা জানান, ভোলার চিকিৎসক অসাবধানতাবসত রোগীর জরায়ুর একটি রগ কেটে ফেলার কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ভোলার মাতৃ নিলয় নার্সিং হোমে ভুল চিকিৎসার কারণে তার স্ত্রী মৃত্যু শয্যায় পতিত হয়। দীর্ঘ ১৭ দিন চিকিৎসার পর এখন কিছুটা সুস্থ্য। শুধু তাই নয় ভোলার এই মাতৃ নিলয় নার্সিং হোমে ভুল চিকিৎসার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। গত ১০ মাস পূর্বে টবগী ইউনিয়নের বাবুল হাওলাদারের স্ত্রী সুমা বেগগ অসুস্থ্য হলে সিজার করাতে আসেন। এই নার্সিং হোমের ডাক্তার এবং নার্সদের ভুলের কারণে সুমার জরায়ু কেটে ফেলে। তিনি আর কোন দিন-ই মা হতে পারবেন না। এ রকম ঘটনা আরো আছে।
লিখিত বক্তব্যে জামাল উদ্দিন হাওলাদার বলেন, মাতৃ নিলয় নার্সিং হোমের সাথে তার ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সিজার করানোর কথা পাকা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদেরকে ৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। তাদের চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা হওয়ায় তারা তার কাছ থেকে আর কোন প্রকার টাকা দাবী করে নাই। বরং তাদেরকে দ্রুত বরিশালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। মাতৃ নিলয় নার্সিং হোমের ডাক্তার এবং নার্সদের ভুল চিকিৎসার কারণে তার প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে স্ত্রীকে সুস্থ্য করার ক্ষেত্রে। জামাল উদ্দিন হাওলাদার মাতৃ নিলয় নার্সিং হোমের কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তাদের কাছে ক্ষতি পুরণ দাবী করেছেন। প্রতিকার না পেলে তিনি মাতৃ নিলয় নার্সিং হোমের মালিক, কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, তার মত আর কোন রোগী যেন এই নার্সিং হোমে ভর্তি না হয়। চিকিৎসা করাতে এসে এমন ভুল চিকিৎসার সম্মুখিন ও হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য মাতৃনিলয় নার্সিং হোমের মালিক, কর্তৃপক্ষ এবং ডাক্তারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তা না হলে তাদের এই খাম-খেয়ালীপনা, অসাবধানতার কারণে অনেক নারীকে অকালে প্রাণ দিতে হবে এবং মাতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হবে বলে মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *