Shadow

মেঘনায় বেপরোয়া জলদস্যুরা, আতঙ্কে কমলনগরের জেলেরা ।

কমলনগর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীতে জলদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহে অন্তত ১৫টি জেলে নৌকা দস্যুদের কবলে পড়ে। ওই সব নৌকার মাঝিও জেলেসহ ৯ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। নদীতে জেলেদের ওপর জলদস্যুদের হানা ও অপহরণের ঘটনায় সাধারণ জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে প্রভাবশালী কয়েকজন আড়ৎদারের যোগসাজসে বেচে-বেচে নিরীহ জেলেদের মাছ ধরার নৌকায় হানাদেয় জলদস্যুরা। লুটে নেয় ঝালানি তেল, মাছ, জাল ও মোবাইলসহ নগদ টাকা।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে উপজেলার লুধুয়া ঘাট, পাতাবুনিয়া খালসংলগ্ন নদী ও মাতাব্বরনগর এলাকার অদুরে মেঘনা নদীতে ৮টি জেলে নৌকায় হানা দেয় জলদস্যুরা। এ সময় অস্ত্রের মুখে ৩ জেলেকে অপহরণ করে। অপহৃত জেলেরা হলেন চর ফলকনের বাসিন্দা আলী আহমদের ছেলে আবদুল মন্নান (৪০), একই গ্রামের বাকলাই মিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩২) ও পাশ্ববর্তী পাটারিরহাট ইউনিয়নের বাচ্চু মাঝি (৪২)। পরদিন বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে ওই ৩ জেলেকে ছেড়ে দেয় দস্যুরা। এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে পাটারিরহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা কালু মাঝি, সফিক মাঝি, চৌকির মাঝি ও মুন্সিরহাট এলাকার আজাদ মাঝিসহ ৬ জেলেকে অপহরণ করা হয়। পরদিন ২০ জানুয়ারি রাতে ২০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করা হয়। এছাড়া আরও ৮/১০টি জেলে নৌকার জেলেদের ধাওয়া করার খবর পাওয়া গেছে।

মুক্তিপণ দিয়ে আসা জেলেরা জানায়, নদীতে মাছ শিকারের সময় জলদস্যুরা অস্ত্রের মুখে তাদের তুলে নিয়ে ভোলার সীমান্তবর্তী চরে নিয়ে আটকে রাখে। এসময় তাদের উপর শারিরীক নির্যাতন করা হয়। জেলেদের ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবী করে; না দিলে হত্যার হুমকি দেয়। পরে পরিবারের লোকজন বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ দেয়া হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলে জানায়, উপজেলার বিভিন্ন মাছ ঘাটের প্রভাবশালী আড়ৎদারদের নৌকায় জলদস্যুরা হানা না দিয়ে সাধারণ জেলেদের নৌকায় হানা দেয়, মারধর ও অপরণ করে। এমন পরিস্থিতিতে রাতে মেঘনায় মাছ ধরা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, নদীতে জেলে নৌকা ডাকাতি ও জেলে অপহরণের ঘটনায় ২৪ জানুয়ারি ৩ জলদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের গ্রেফতার করতে চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *