Shadow

রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাছেদের আক্ষেপ নিয়ে কিছু কথা

 

ভোলা প্রতিনিধি : ১৯৭১ সালে বাংঙ্গালির স্বাধিকার আন্দোলনের জন্য বয়ে যাওয়া দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে অংশগহন করেছেন ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়র্ডের কোড়ালিয়া গ্রামের মৃতঃ আঃ খালেকের ৪ ছেলে। তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগহন করতে পেরে গর্ববোধ করছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাছেদ জানান,১৯৭১ সালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে ভাসনের পর তারা ৪ ভাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে। তার বড় ভাই সুবেদার সামছুল হক তৎকালীন পাকিস্তানে ৯২২৬ আর্টি রেজিমেন্ট সেনাবাহিনীতে চাকুরী করতেন। বঙ্গবন্ধুর ভাসনের পর স্ত্রীর অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে ভাই আবুল বাছেদ, মোঃছিদ্দক ও শহীদ মোঃ ইউনুসকে সাথে নিয়ে টনির হাট(বাংলাবাজার) মাদরাসার মাঠে প্রশিক্ষণ দেয় সুবেদার সামছুল হক,কাঞ্চন, টু ছিদ্দিক, তোফায়েল মাস্টার ও হাই কমান্ড ছিদ্দিকসহ আরো অনেকে। এ খবর পেয়ে রাজাকার মোঃ টনি মাদরাসার মাঠে চাষাবাদ শুরু করে। পরে তারা উপায়ন্তর না পেয়ে আশ্রয় নেয় দেউলা ইউনিয়নে। সেখানে থেকে হাই কমান্ড ছিদ্দিক এর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরে। ২৭/৪/১৯৭১ সালে ভোর রাতে বাগমারা দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজাকার মোঃ টনির ননেতৃত্বে অতর্কিত হামলা শুরু করে। তাদের সাথে যোগ দেয় স্থানীয় রাজাক আবুল হোসেন,মুকবুল কমান্ডার, সেকান্দর মিয়া,কয়ছর আহাম্মদ,ফজলে করিম জমাদ্দার,জাফর চৌকিদার, গঙ্গা পুরের চুন্নু মিয়াসহ আরো অনেকে।বাছেদ আরো জানান ,যুদ্ধের সময়ে তার ছোট ভাই মোঃ ইউনুস পাক বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়ে মারা গেছেন। বড় ভাই সুবেদার সামছুল হকের স্ত্রী আছিয়া খাতুন পাক বাহিনী ও রাজাকারদের হাতে নির্মম নির্যাতনের শীকার হয়েছেন। তার স্বামী সামছুল পাক বাহিনীকে পরাস্ত করে একটি থ্রী-নট রাইইফেল উদ্ধার করে। ওই অস্রটি নেয়ার জন্যই আচিয়া খাতুনকে ব্যাপক অত্যাচার নির্যাতন চালায় তারা। আচিয়া খাতুন জীবন বিসর্জন দিতে প্রস্তুত ছিল,কিন্তু স্বামীর খবর রাজাকার ও পাক বাহিনীকে জানায়নি। পরবর্তীতে ওই রাজাকার নিয়েই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যুগিরঘোল ওয়াপদায় ঘাঁটি পেতে। শুর করে তারা নারী ধর্ষণ,লুটপাট ও পৈশাচিক নির্যাতন। কয়েককদিন পর দেউলা তালুকদার বাড়ির সামনে একটি বাগানে মুক্তিকামী জনতার সাথে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে মুখো- মুখি লড়াই শুর হলে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও দক্ষিণ দিঘলদীর রাজাকার মোতাসিম বিল্লাহ সহ আরো অনেকে প্রাণ হারায়। পরবর্তীতে পাক বাহিনী দুর্বল হয়ে পরে। আবুল বাছেদ আক্ষেপ করে বলেন,যুদ্ধের সময় মেহেন্দি গঞ্জের বজলুর রশিদ,মোঃইউনুস তাদের সাথে সক্রিয় ভাবে মুক্তিযুদ্ধ করলেও তাদের নাম গেজেট হয়নি।অথচ এখন ঘরে ঘরে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভাব নেই। তিনি বলেন,প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক ভাবে সনাক্ত করে তাদের যথাযথ মুল্যায়ন করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানান। আবুল বাছেদ জানান,মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ঊনসত্তরের মহানায়ক,জননেতা তোফায়েল আহমেদের নির্দেশনা অনুযায়ী এখনো আমরা সকল অন্যায় অপশক্তি প্রতিহত করতে বদ্ধপরিকর। তোফায়েল আহমেদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্ধার করে এনে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তার জন্য আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করছি। তিনি আমাদের জাতিয় নেতা। তার মাধ্যমে অনেক কিছুই অর্জন করেছি। তার কর্মর্কান্ডে মুগ্ধ হয়ে তাকে অনুকরণ করে চলছেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাছেদ। তার কাছে কোন কিছই চাওয়া পাওয়া নেই তার । বরং তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বললেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে বাছেদ। তার ভাষায় বাংলার লায়ন তোফায়েল আহমেদ। কে কোন দল করল তা দেখার বিষয় নয়। তার মত জাতিয় নেতা দক্ষিণ এশিয়ায় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই তাকে সবাই শ্রদ্ধা করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *