Shadow

শুক্রবার ভোলায় দোকান খোলা নিয়ে ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ

ভোলা প্রতিনিধি ॥ সপ্তাহে একদিন (শুক্রবার) ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা ছুটি কাটিয়ে থাকেন। এই দিনকে সামনে রেখে বিভিন্ন কাজের পরিধি বাড়ান। বিশেষ করে বিয়ে-শাদি, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আড্ডাসহ সামাজিক কিছু কর্মকান্ড নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। এই বন্ধের দিনে যদি কোন ব্যবসায়ী দোকান খোলেন তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই অন্যান্য ব্যবসায়ীরা তা মানতে পারেন না। কারণ সকল ব্যবসায়ীরা চান ছুটির দিনে সকল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকুক অথবা সবার দোকান খোলা থাকবে। কেউ খুলবে, আর কেউ খুলবে না, এটা হতে পারে না।
সম্প্রতি এক শুক্রবারে ভোলা শহরের বিভিন্ন মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে ওই সকল মার্কেটের কিছু কিছু দোকান খোলা, আবার অনেক দোকানের অর্ধেক সার্টার উঠানো। কেউ কেউ বেচা-কেনা করছেন আবার কেউ দোকান ঘুলে আড্ডা দিচ্ছেন। যে সকল মার্কেটের কিছু ব্যবসায়ীরা শুক্রবার ছুটির দিনেও দোকান খোলা রাখেন, সেগুলো হচ্ছে জিয়া মার্কেট, সদর রোড ও কে-জাহান মার্কেট। তবে কে-জাহান মার্কেটে চিত্র ভিন্ন। মার্কেটের দোকান বন্ধ ঠিকই, কিন্তু ওই মার্কেটের কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা মার্কেটের ফুটপাতে দোকানের পসড়া সাজিয়ে বসেন। সেখানে তারা বেচা-কেনা করছেন দে-ধারছে। এখন সাধারন অন্যান্য ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলেছেন যে, শুক্রবার ছুটির দিনেও যদি কিছু ব্যবসায়ী তাদের দোকান খোলা রাখেন, তাহলে আমাদের দোকান খোলা রাখলে দোষের কি ? তারা বলছেন যদি দোকান খোলা রাখতে হয়, তাহলে সবাই খোলা রাখব। আর যদি বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে সবাই বন্ধ রাখব। কেউ খুলবে আর কেউ খুলবে না, তা হতে পারে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জিয়া মার্কেটের এক ব্যবসায়ী জানান, আজ ৩০ বছর যাবত এই মার্কেটে ব্যবসা করছি। কোন দিন শুক্রবারে দোকান খুলিনি। কিন্তু দু’-চার জন ব্যবসায়ী আছেন যারা ঝড়-তুফান-বৃষ্টি কিংবা কেউ মারা গেলেও শুক্রবার দোকান খুলবেই। তবে এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে যে কোন সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিতে পারে।
একাধিক শ্রমিকদের সাথে আলাপ করলে তারা ক্ষোভের সাথে জানান, আমরা সপ্তাহে একদিন বন্ধ পাই। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবসায়ী মালিকরা শুক্রবারও দোকান খোলা রাখছেন। তাদের এই মন গড়া কার্যক্রমের কারণে আমাদের সাপ্তাহিক বন্ধের যে সুযোগটি পোতাম তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছি। আমরা সপ্তাহে একদিন (শুক্রবার) বন্ধসহ বিষয়টি কার্যকর করার দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, বহুবার বলার পরেও ওই সকল কিছু অসাধু ব্যবসায়ী শুক্রবারেও দোকান খোলা রাখছে। যারা ছুটির দিনেও দোকান খোলা রাখছেন তাদের বিরুদ্ধে সকল মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এক হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ভোলা জেলা বস্ত্র মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম মিলন বলেন, ভোলায় মার্কেটিং অফিস না থাকায় আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারছি না। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ছুটির দিনেও দোকান খোলা রাখছে। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেলা কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুল হক জানান, সরকারের শ্রম আইন অনুযায়ী সপ্তাহে একদিন ছুটি দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ভোলায় এই নিয়ম কিছু কিছু ব্যবসায়ীরা মানছেন না। তারা সরকারের আইনকে অমান্য করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছে। আমরা এই অনিয়ম বন্ধের দাবী জানাচ্ছি।
জেলা মার্কেটিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ভোলায় কোন লেবার অফিস নেই। তাই পূর্বের জেলা প্রশাসক মেজবাহুল ইসলাম লেবারদের স্বার্থে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য একটি চিঠি দেন। সেই আলোকে আমরা পূর্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে (শুক্রবার) ছুটির দিনে দোকান বন্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু বর্তমানে লোক-বলের অভাবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাচ্ছে না। অচিরেই এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *