Shadow

ডিমলায় ভূমিদস্যু ও জাল দলিল চক্রের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

(মশিয়ার রহমান,নীলফামারী প্রতিনিধি):-
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জাল দলিলচক্র ও ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। সোমবার (২১শে নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার বিজয় চত্বর এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকাবাসী ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে।এ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুন-অর-রশিদ, মো. মহুবার হোসেন, মো. মশিয়ার রহমান, ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমানসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও সুধীমহল।বক্তারা বলেন, জাল দলিলচক্রের মূলহোতা মো. মাজেদুল, রনজিৎ, মো. হাফিজুল, মো. ময়েন কবিরগং।তারা জাল দলিল তৈরি করে এলাকার নিরীহ মানুষের জমি দখলে নিয়ে ভোগদখল ও বিক্রি করছে প্রতিনিয়ত। ভুক্তভোগীগণ প্রতিবাদ করলে উল্টো মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা প্রকার হয়রানির শিকার হন তারা। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের সহায়তা চান ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও এলাকাবাসী।ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ভূমিদস্যুরা জাল দলিল, ভূমির রেকর্ড ও মাঠপর্চা তৈরি করে নিরীহ মানুষের শতশত একক জমি অবৈধভাবে দখল করে চলেছে। টাকার বিনিময়ে জাল দলিল তৈরি করে অন্যকেও জমি দখল করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে এই চক্র। মোটা অংকের টাকা দাবী করে এ প্রতারক চক্রটি প্রকৃত ভূমি মালিকদের একের পর এক মিথ্যা মামলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছে। ভূমিদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় এই চক্রের বিরুদ্ধে জাল দলিলের মামলা করেও কোন লাভ হচ্ছে না।ইউপি সদস্য মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমার ক্রয়কৃত ৭ একর সম্পতি জাল দলিল করে জোরপূর্বক ৫ বছর ধরে দখল করে খাচ্ছে এই চক্র। আমার মতো অনেকের জমিজমা এভাবে জোর করে খাচ্ছে তারা।আরেকজন ভুক্তভোগী মো. মহুবার হোসেন বলেন, ভূমির সব পর্যায়ের জাল কাগজপত্র, রেভিনিউ স্ট্যাম্প, বিভিন্ন সিলমোহর রয়েছে তাদের নিকট। এমনকি জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্প, ভূমি কার্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নামে তৈরি করা নকল সিল ও জাল স্বাক্ষরের ব্যবস্থাও রয়েছে এই চক্রের নিকট। একইসঙ্গে পুরোনো দিনের বিভিন্ন আমলের স্ট্যাম্পও রয়েছে এই জাল দলিল চক্রের হাতে। তাদের এ কাজে রংপুরের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগীগণ পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন জানিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সচেতন নাগরিক সমস্যার সমাধানে প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে।মানববন্ধন শেষে ভূমিদস্যু ও জালিয়াত চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বারকলিপি প্রদান করেন।তবে অভিযোগ অস্বীকার করে, অভিযুক্তদের একজন মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, এসব মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি রনজিৎ ভুইমালীর কাছে জমি কিনেছি মাত্র। রনজিৎ ভুইমালীর সাথে অনেকের জমিজমা নিরোধ ও মামলা চলছে। তারাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, সম্প্রতি ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ আমলের শতাধিক সরকারি স্ট্যাম্প ও দলিল জাল করার বিভিন্ন উপকরণসহ বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের জাল সই-সংবলিত ১৬৫টি সিলমোহরসহ জাল চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিমলা থানা পুলিশ। খুব শীঘ্রই এই চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।