Shadow

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ভোলা-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩ নেতার লড়াই !

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ভোলা-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৩ নেতার লড়াই !

pnewsভোলা প্রতিনিধি : আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোলা-২ আসনে বিএনপি দলীয় তিন নেতার লড়াইয়ে অংশগ্রহনের খবরে তৃণমূলে ব্যাপক  আগ্রহ  ও কৌতুহল দেখা দিয়েছে। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সাম্প্রতিক সময়ে একেক নির্বাচনী এলাকায় একজনের বিকল্প আরো দু’জন প্রার্থী রাখার ঘোষনা দেওয়ায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভাবে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির নেতারা নিজ নিজ নির্বাচনী একালার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগের মাত্রা বারিয়ে দিয়েছে। যার যার অবস্থানকে বিএনপির চেয়ারপার্সন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং কেন্দ্রেীয় ভাবে জানান দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের মধ্য থেকে ভোলা-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহীম, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জাহাঙ্গীর এম. আলম ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মমিন।
দৌলতখান- বোরহানউদ্দিন উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ভোলা-২ আসন। এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হচ্ছেন, আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহীম। তিনি ২০০১ সালে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে হাফিজ ইব্রাহীম এমপি নির্বাচিত হয়ে দৌলতখান বোরহানউদ্দিনের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তার উন্নয়ন কর্মকান্ডে ওই অঞ্চলের মানুষ মুগ্ধ। ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহীম জেল হাজতে থাকায় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পান চারদলীয় জোট থেকে আশিকুর রহমান শান্ত। নির্বাচনের পর থেকে নেতাকর্মীদের সাথে কোন রকম যোগাযোগ না থাকার কারণে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। ওই নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মমিন। তিনি দৌলতখানের কিছু নেতাকর্মী সাথে নিয়ে কেন্দ্রে জোড়ালো তদবির চালিয়েও দলের মনোনয়ন ছিনিয়ে আনতে পারেননি।
অপরদিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের সন্তান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জাহাঙ্গীর এম. আলমও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ওই আসনে বিএনপি দলীয় এমপি প্রার্থী হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছেন। সে থেকে তিনি আগামী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে অনেকটা আশাবাদী হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তৃণমূল এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার অবস্থানকে জানান দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের একটি অংশকে হাতে নিয়ে দুটি উপজেলায় বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করছেন।
অন্যদিকে বিএনপির একটি গ্রুপ জানান, হাফিজ ইব্র্রাহিম এমপি হয়ে ক্ষমতার বলয়ে যে পরিমান উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন, তার চেয়ে বেশি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন। আবার সংগঠনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করে ইউনিয়ন এবং উপজেলায় পকেট কমিটি গঠনের কারণে বহু-ত্যাগী নেতা কর্মী হাফিজ ইব্রাহিমের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন। অনেকে আবার বিএনপির কর্মকান্ড থেকে নিস্ক্রীয় রয়েছেন। এক এগারো এর পর তার ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার করার জন্য এলাকার ত্যাগী নেতাকর্মীর সাথে কোন রকম যোগাযোগ রক্ষা করে নাই। তার প্রয়োজনে এলাকায় যাওয়া আসার জন্য তার নিজস্ব দলীয় কিছু নেতাকর্মীকে ব্যবহার করে চলাফেরা করতেছেন। তাই তার বিপল্প প্রার্থী হিসাবেও খুজছেন ঐ নেতাকর্মীরা। অপর একটি সূত্র জানায়, হাফিজ ইব্রাহীমের নামে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান আছে। ওই মামলার কারণে তিনি যদি আগামী নির্বাচনে অংশ গ্রহন করতে না পারেন, তাহলে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে জাহাঙ্গীর এম. আলমকে চাইবেন তারা।
এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন দেখা যাচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও তারেক রহমান আন্তর্জাতিক পরিষদ ইউএসএ এর সভাপতি ও ভোলা জেলা বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর এম. আলম তার পক্ষে দৌলতখান- বোরহানউদ্দিন উপজেলার বিএনপির একটি গ্রুপ অবস্থান নিয়েছেন বলে দলীয় সুত্র জানায়। ফলে এখানে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে কার্যত ত্রি-ধারায় বিভক্ত হয়ে পরেছে দলের নেতা কর্মীরা। জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের সন্তান। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী থেকে তিনি সেখানে দলের ক্লান্তিকালে আন্দোলন সংগ্রামে স্বক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করেছেন। এমনকি বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মুক্তির জন্য নিউইয়র্কের  বিভিন্ন যায়গায় সভা সমাবেশ, প্রতিবাদ ও মানব বন্ধন করেছেন। তার প্রতিদান হিসাবে ভোলা -২ আসনে আগামী নির্বাচনে তাকে দল মনোনয়ন দিবেন বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
অপরদিকে ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম মমিন দলের মনোনয়ন পাওয়ার জন্য কেন্দ্রে নিয়োজিত লবিং তদবির অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা এই নেতার মনোনয়নের ব্যপারে তেমন একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। কারণ তিনি প্রথম থেকেই দুই একজন নেতা ছাড়া তৃণমূলের কোন নেতাকর্মীর সাথে যোগাযোগ রাখছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *