Shadow

সম্পাদকীয় : কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি শিল্প !

সম্পাদক : “ও বউ ধান বান রে, ঢেঁকিতে পাড় দিয়া” “ঢেঁকিতে নাচে বউ নাচে, হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ ধান ভান রে”। এই গানটি এখন শুধুমাত্র স্মৃতি, কালের বিবর্তনে  ঐতিহ্যবাহি ঢেঁকি শিল্প আজ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দু’একটি গ্রামে ঢেঁকি শিল্পের দেখা মিললেও তা  একেবারেই  হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র।
আজ থেকে কয়েক বছর আগে ঢেঁকি শিল্পের ব্যবহার ছিল  সর্বাধিক। কিন্তু যুগ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঢেঁকি শিল্পের ব্যবহার না থাকায় আজ তা বিলুপ্তির পথে। এক সময় ঢেঁকি ছাড়া মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কাজ করা যেন কোন ভাবেই সম্ভব ছিল না। কিন্তু বর্তমান যুগে বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারনে ঢেঁকি শিল্পের ব্যবহার আর নেই বললেই চলে। আদিম যুগের লোকেরা ঢেঁকি দিয়েই সব কাজ কর্ম করত, কিন্তু তা এখন বিলুপ্তির পথে। কেননা এখন বর্তমানে ধান, চাউলের আটা ও চিঁড়া বৈদ্যুতিক মিল হওয়ায় কৃষকরা খুব সহযেই তা মেশিনের  সাহায্যে ধান, আটা ও চিঁড়া কম সময়ে খুব কম খরচে ভাঙ্গাতে পারছেন। তাই কৃষকরা বৈদ্যুতিক মিলের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন। ঢেঁকিতে বানা ধানের চালের ভাত, খিচুড়ি, খির, পায়েশ, চিঁড়ার নিজস্ব স্বাধ ও ভিটামিন ছিল। আগের দিনে কৃষকেরা বাড়ীতে অনেক কষ্ট করে ধান ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে চাল তৈরী করত। ধান ভাঙানোর বৈদ্যুতিক মিল হওয়ায় কৃষকদের বাড়ির নারীদের আর কষ্ট করে ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে ধান ভেঙ্গে চাল, আটা ও চিঁড়া তৈরী করতে হচ্ছেনা। বর্তমানে গ্রামের এক-দুটি কৃষকের বাড়ীতে ঢেঁকি দেখা যায়। আর কিছু দিন পরে কালের আবর্তে হারিয়ে যাবে গ্রাম বাংলার শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। আগে এই ঢেঁকির প্রায়োজন ছিল যখন প্রচন্ড ঠান্ডা ছিল সেই সময় কি ছেলে-মেয়ে আর কি বুড়া-বুড়ি সবাই মিলে চুলা পুড়া সাইটে দিয়ে সবাই মিলে আগুনে হাত শেখতে আর ভাপা পিঠা, চিতাই পিঠা, কুলি পিঠা, নুনচিয়া পিটা সবাই মিলে খাইত। কিন্তু সেই সব দিনের কথা ভুলে গেল আজকের কালের বিবর্তনের কারনে। বিশেষ করে মুসলমান হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসবের সময় এই ঢেঁকি দিয়ে চালের আটা তৈরী করার ধুম পড়ে যেত গ্রামে। যাহা বর্তমান প্রজন্মের কাছে রুপকথার গল্পের মত হয়ে দাড়াচ্ছে।
ওই দিন আর বেশি দূরে নয়,এক সময় দেখবেন  ভাত খেতে আর হাতের বেবহার   লাগে না ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *