Shadow

ভোলার মৎস্য অফিস খাঁ খাঁ

মীর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন : ভোলা মৎস্য অফিস। ঘড়ির কাঁটায় সোমবার দুপুর সোয়া ১২টা। অফিস ভবনে ঢুকতেই নিচতলায় দেখা গেল একটি কক্ষের ওপরে ইকোফিশ প্রকল্পের সাইনবোর্ড। কিন্তু কক্ষ তালাবদ্ধ। পাশের কক্ষের অবস্থারও একই হাল। স্টোর রুমটি খোলা থাকলেও সেখানে কারো দেখা মেলেনি। দোতলায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কক্ষটিও বন্ধ। দোতলার ছয়টি কক্ষের সবটিতেই তালা লাগানো ছিল। তৃতীয় তলায় কয়েকটি বিশ্রামাগার খোলা থাকলেও সেখানে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখা যায়নি।

সর্বশেষে মৎস্য ভবনের ছাদে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এক নারীকে দেখা গেল অফিসে ঢুকছেন। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার নাম মাকসুদা বেগম। আমি এই অফিসের ঝাড়ুদার।’

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাকসুদা বলেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম অফিসের কাজে মনপুরায় গেছেন। আসবেন মঙ্গলবার (আজ) সন্ধ্যায়। অন্য স্যারেরা হয়তো অফিসের কাছাকাছি আছেন। পাঁচ মিনিট পর হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে অফিসে ঢোকেন নৈশ প্রহরী সুজন। তিনি বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং প্রকল্প থেকে ভোলা জেলা মৎস্য অফিসের নৈশ প্রহরী হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ১২টা ৪০ মিনিটে আসেন অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম। তিনি বোরহানউদ্দিন উপজেলা মৎস্য অফিসের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত। তিনিও জেলা অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। নুরুল ইসলাম বলেন, জেলা মৎস্য অফিসে ১০টি পদের মধ্যে ছয়টি পদই শূন্য। লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্প্রতি জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় মেরামত, এসি স্থাপনসহ উন্নয়নমূলককাজ হলেও জনবলের কোনো উন্নয়ন হয়নি।

অথচ কাল ১২ অক্টোরব থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২০ দিন ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শুরু হচ্ছে। জনবলবিহীন ভোলা জেলা মৎস্য অফিস কিভাবে অভিযান চালাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অফিস সহকারী নুরুল ইসলাম।

এদিকে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম মোবাইল ফোনে বলেন, ‘দীঘদিন ধরেই এ অফিসে জনবল সংকট রয়েছে। এখানে কর্মকর্তা বলতে আমি একাই রয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বহুবার চিঠি দিলেও কোনো কাজ হয়নি। তবে জেলা অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দুজনকে দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *