Shadow

ভোলায় ব্যবসায়ীকে কারাদন্ড দেয়ার ঘন্টাখানেক পরে ঘুরে গেল রায়

চীফ রিপোর্টার, ভোলা ॥ ভোলায় প্রায় ১ লক্ষ বাগদা চিংড়ি রেনুসহ এক ব্যবসায়ীকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালত। ঘটনাস্থলেই তাকে ১ মাসের কারাদন্ড প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাওসার হোসেন। কারাদন্ডের ঘণ্টাখানেক পরেই ওই রায় আবার ঘুরে যায়। রবিবার এ ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের স্লুইজগেট এলাকায় অবৈধভাবে বাগদা চিংড়ি শিকার করে তা মওজুদের মাধ্যমে অন্যত্র বিক্রির করার পায়তারা চালাচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় সেখান থেকে প্রায় ১ লাখ বাগদা রেনু পোনাসহ জিন্নাহ মিয়া নামের এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। এবং জব্ধকৃত বাগদা রেনু পোনা নদীতে অবমুক্ত করা হয়। আটককৃত ওই ব্যবসায়ী শিবপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
এদিকে বাগদা ব্যবসায়ী জিন্নাহকে আটক করে কারাদন্ড দেওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলেই জিন্নাহ হুমকি দিয়ে পুলিশের সামনেই বলেন, আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসছি। কিন্তু সেই জিন্নাহ’র দাম্ভিকতার হুমকি-ই বাস্তবায়িত হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
কেননা জিন্নাহকে ১ মাসের কারাদন্ড দেওয়ার ১ ঘন্টা পরেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাওছার হোসেন তার রায় পরিবর্তণ করেন। ওই বাগদা ব্যবসায়ীকে তিনি নতুন করে পুনরায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেন। সহকারী কমিশনার কাওসার হোসেনের হঠাৎ এমন রায় পরিবর্তনের ঘটনায় ভোলায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ঘটনাটি ভোলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এখন ভোলার মানুষের মাঝে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে জন সম্মুখে যে রায় প্রদান করা হয়েছে তা ঘণ্টাখানেক পরে কিভাবে পরিবর্তণ হয় ?
ঘটনার বিষয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাওছার হোসেন সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি যেই রায়টি দিয়েছি তাও সঠিক, কিন্তু যার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছি তিনি মুল আসামী না হওয়ার পরে আগের রায় পরিবর্তণ করেছি। নাকি উপরের কোন তদবিরের কারণে কারাদন্ডের পরিবর্তে জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। তবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাওছার হোসেন ওই বাগদা ব্যবসায়ীর পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন জিন্নাহ নির্দোষ, তাই তাকে জরিমানা করেছি।
অপরদিকে ঘটনাস্থলেই আটককৃত জিন্নাহ সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে বলেছেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ এ বাগদা চিংড়ি রেনুর ব্যবসার সাথে জড়িত। এখান থেকে বাগদা চিংড়ি শিকার করে তা খুলনায় পাঠান।
ঘটনার বিষয়ে ভোলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন আল ফারুক এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি  জানান, রায় পরিবর্তনের বিষয়টি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’র এখতিয়ার আছে। বর্তশানে আমি ঢাকায় আছি, তবে বিষয়টি দেখতেছি।
এখন ভোলার সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশ্ন হচ্ছে যদি জিন্নাহ যদি নির্দোষ-ই হয় তাহলে কিভাবে তাকে জরিমানা করা হলো। আর যদি জিন্নাহ অপরাধী হয় তাহলে কিভাবে তাকে ছেড়ে দেয়া হলো। স্থানীয় লোকজনসহ ভোলার সচেতন মহল মনে করছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাওসার হোসেন উপর মহলেরর চাপের কারণেই কারাদন্ড প্রদান করেও পরে তা পরিবর্তণ করে জরিমানার মাধ্যমে বাগদা চিংড়ি ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *