Shadow

মেম্বার প্রার্থীর ভোট বর্জন কেন্দ্র দখল জাল ভোট ব্যাপক সংঘর্ষ ও অনিয়মের মধ্যে দৌলতখানের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন

মীর মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন  : কেন্দ্র দখল জাল ভোট ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া তুমুল সংঘর্ষ, কারচুপি ও ভোটবর্জনসহ নানা অনিয়মের মধ্য দিয়ে গতকাল রবিবার ভোলার দৌলতখান উপজেলার সৈয়দপুর ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মহড়ায় নির্বাচনী কেন্দ্র ও আশপাশে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক চলতে থাকে। এরই মধ্যে ভোটাররা ভয় নিয়ে ভোট দিতে আসে। সকাল ৯ টার পর পর শুরু হয় বিভিন্ন কেন্দ্রে চরম বিশৃঙ্খলা ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বিশেষ করে মেম্বার প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে সাধারণ ভোটার ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অবস্থানের ফলে পরিস্থিতি চরম অবনতি হতে থাকে।

সকাল ৯টার পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষ প্রতীকের কোন এজেন্ট পাওয়া যায়নি। সকাল সাড়ে ১০টার সময় সৈয়দপুরের ৪নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র হোসাইনিয়া এতিমখানা মহিলা আলিম মাদ্রাসায় মেম্বার প্রার্থী সাবেক মেম্বার ইয়ারুল ইসলাম ও তার লোকজনকে কেন্দ্র থেকে জোরপূর্বক বের করে দিয়েছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। প্রার্থী ইয়ারুল ইসলাম বিষয়টি প্রিজাইটিং অফিসার ও পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোন প্রকার প্রতিকার পায়নি বলে জানান। একপর্যায়ে উপায়ন্তর না পেয়ে তিনি সকাল সাড়ে ১১ টার সময় কারচুপি, মারধর, জাল ভোট, তিনি ও তার এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ এনে নিজ বাড়ীতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে মেম্বার প্রার্থী ইয়ারুল ইসলামের বড় ভাই দৌলতখান পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন। মেম্বার প্রার্থী ইসমাইলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে উপজেলা যুবলীগের ক্যাডার কবির, নিজামউদ্দিন ও জাহাঙ্গির চৌকিদারসহ ৫০/৬০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসীরা মেম্বার প্রার্থী ইয়ারুল ইসলামকে ধাক্কা দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। এসময় তার এজেন্টরা প্রতিবাদ করতে চাইলে তাদেরকেও মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। তাৎক্ষনিক ভাবে দায়িত্বরত ম্যাজিষ্ট্রেট ও প্রিজাইটিং অফিসারকে ইয়ারুল ইসলাম জানালেও তারা কোন ঘটনা ঘটেনি বলে এড়িয়ে যান। জাল ভোট, মারধর, কেন্দ্র দখল কারচুপি ও বিভিন্ন অভিযোগ এনে মেম্বার প্রার্থী ইয়ারুল ইসলাম ভোট বর্জন করেছেন এবং পুনরায় ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহনের দাবী জানান। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, যে নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থীরাই ভোট কেন্দ্রে টিকে থাকতে পারেনি, সেই নির্বাচনে অন্য দলের প্রার্থীরা থাকারতো প্রশ্নই আসে না। এদিকে প্রতিটি কেন্দ্রেই মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, জাল ভোট ও ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২নং ওয়ার্ডের কেন্দ্র কালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ৪ জনকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করেন। দুপুর ১ টার সময় ওই ইউনিয়নের ৮ নং বড়ধলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের দুই মেম্বার প্রার্থী ফয়েজউদ্দিন ও শহিদের সমর্থকদের মধ্যে জাল ভোট নিয়ে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে র‌্যাব ঘটনাস্থলে পৌছলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সেখানে উভয় পক্ষের ২০/২৫ জন কর্মী আহত হন। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েক মিনিটের জন্য ভোট গ্রহন স্থগিত করলেও অদৃশ্য ইশারায় আবার ভোট গ্রহন শুরু হয়। ৬নং ওয়ার্ডে মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে ঘন্টাব্যাপি। এদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে কোন অপ্রিতীকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলেও বিএনপির প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিজাম মেম্বার ভয়ে বিভিন্ন মেন্দ্রে যেতে পারেনি। তার পোষ্টার কোথাও দেখা যায়নি। অপরদিকে নৌকা প্রতীক জিএস ভুট্টু তালুকদার এর পক্ষে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে ভোটারদের। সাধারণ ভোটাররা জানান, সরকার দলীয় একাধিক মেম্বার প্রার্থী থাকার কারণে তাদের পক্ষে-বিপক্ষে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অবস্থান নেওয়ায় বিএনপির প্রার্থী ও ভোটাররা ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *