রামগতি (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে নতুন বছরের বই বিতরণে টাকা আদায়, বেপরোয়া দুর্নীতি- লুটপাট, বদলী বাণিজ্য, স্কুল থেকে বিভিন্ন ছুতোয় টাকা আদায়, সিএসএসআর প্রকল্পের টাকায় ক্রয় বাণিজ্য, জুন ক্লোজিংয়ের টাকা আত্নসাত, বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্ণামেন্টের টাকা নয়ছয়, বক্তব্যে জাতীয় শ্লোগান না দেয়া সহ নানান অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান নতুন বছরের বই বিতরণে প্রত্যেক স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে পিয়নদের খাওয়ার নাম করে ১শ টাকা করে আদায় করে। এ টাকা কালেকশন করেন চর ডাক্তার সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মোশারেফ। তিনি সিএসএসআর প্রকল্পের পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণু মুক্ত করার হারপিক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্লিচিং পাউডার, ভিক্সল, সাবান সহ অন্যান্য সামগ্রী ক্রয়ে ৯৬টি স্কুলের মধ্যে ৬৫টি স্কুলের মালামাল নিজেই সরবরাহ করেন তাও আবার বাজারের সবচেয়ে নিন্মমানের নকল সামগ্রী। স্কুল প্রতি ১৮হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও মালামাল দেন ৫/৬ হাজার টাকার। স্কুলে এসব মালামাল সরবরাহ করার জন্য তাকে ঠিকাদারী দিতে নিয়োগ করেন দালাল। আলেকজান্ডার ইউনিয়নের দালাল চর ডাক্তার সপ্রাবি প্রধান শিক্ষক মোশারেফ হোসেন, চর আলগীর দায়িত্বে চর নেয়ামত সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক ফারুক আর পৌরসভার স্কুল সমূহের দায়িত্বে প: চর সেকান্দর সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান।
২০২১-২২ অর্থ বছরের জুন ক্লোজিংয়ে স্কুলের ক্ষুদ্র ও মাইনর মেরামত. এক্সেসসরিজ ও খেলনা ক্রয়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত স্কুল সমূহ থেকে দেড় পার্সেন্ট করে প্রায় ২লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা আদায় করেন।
সহকারী শিক্ষা অফিসার আজিজুর রহমান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মেতে উঠেন বদলী বাণিজ্যে। তিনি ১ম ও ২য় ধাপের বদলীকৃত শিক্ষকদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩০/৫০ হাজার টাকা করে আদায় করেন। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্টের খেলায় ইউনিয়ন ভিত্তিক বাজেট নিয়ে লুকোচুরি করে বিপুল অংকের টাকা আত্নসাত করেন বলে জানা যায়।
আরো জানা যায়, সূবর্ণচর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার থাকা কালে সে বহু অনিয়ম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিলেন।
সংক্ষুব্দরা জানায়, তিনি তার বক্তৃতায় কখনোই জয় বাংলা জাতীয় শ্লোগান দেন না।
এসকল অনিয়ম, দুর্নীতি- লুটপাট, অসদাচরণ, ঠিকাদারীর প্রতিকারে তার বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা পরিষদের ৪৩তম মাসিক সাধারণ সভায় রেজুলেশন করা হয়।
চর ডাক্তার সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মোশারেফ হোসেন, পশ্চিম চর সেকান্দর সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান, চর কলাকোপা সপ্রাবির প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন সহ অপরাপর প্রধান শিক্ষকরা তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দালালীর অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমরা আসলে বিষয়গুলো শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমাদের কি করার আছে।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষা অফিসার আজিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে এড়িয়ে যান।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ জানান, আজিজুর রহমান একজন স্বাধীনতা বিরোধী মতাদর্শের লোক। সে বক্তব্যে কখনোই জাতির পিতার নাম এবং জাতীয় শ্লোগান জয় বাংলা উচ্চারণ করেন না।