Shadow

সন্ত্রাস ও কারচুপির কত ধরন তা ইউপি নির্বাচনে দেখা গেছে: সুজন

প্রয়াস বার্তাকক্ষ : সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ‘ভৌতিক’ আখ্যায়িত করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলেছে- এই নির্বাচন ছিল সহিংসতা ও সংঘর্ষে ভরপুর। সন্ত্রাস ও কারচুপি কত ধরনের হতে পারে তা এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে নির্বাচনোত্তর এক সংবাদ সম্মেলনে সুজনের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। এছাড়া নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কারে জাতীয় সংলাপ আহ্বানের দাবি তোলে সুজন।
সংবাদ সম্মেলনে সুজনের নির্বাহী কিমিটির সদস্য সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে এটা ছিল সব থেকে খারাপ নির্বাচন। এর সঙ্গে অতীতের কোনও নির্বাচনকে মেলানো যাবে না।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে আমরা মৌলিক গণতন্ত্র দেখেছি। কিন্তু এবার দেখলাম ভৌতিক গণতন্ত্র। কেননা এবারের নির্বাচনে একদিকে ভোটাররা ভয়ে ভোট দিতে পারেননি। অপরদিকে মৃত ভোটার ‘ভুত’ হয়ে এসে ভোট দিয়ে গেছেন। এর মানে এটা ছিল- ভৌতিক গণতান্ত্রিক নির্বাচন।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস ও সহিংসতা কত প্রকারের হতে পারে এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন তা প্রমাণ করে দিয়েছে।

সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ইউপি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনের যে ধারা বা ট্রেন্ড প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা নিয়ে আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে যে ধারা চলে আসছে তা বন্ধ করা না গেলে দেশের গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে না।

তিনি বলেন, সহিংসতা, হানাহানি, ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও হয়রানি, পুলিশের উপস্থিতিতে ভোট কারচুপি ইত্যাদি আমরা এবারের নির্বাচনে ব্যাপক আকারে দেখতে পেয়েছি। নির্বাচন কমিশন এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন বলেছে। তার মানে নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো ঘটেছে।

মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, নির্বাচনের যে মডেল বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে তাতে ২০১৯ সালের নির্বাচনেও যে ক্ষমতাশীনরাই পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে যাবে, যা গণতন্ত্র চর্চার ক্ষেত্রে মঙ্গল বয়ে আনবে না। এই পেক্ষাপটে তিনি জাতীয় ভিত্তিতে একটি সংলাপ হওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন। নির্বাচনের পর এখন নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সংস্কার তথা স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সুজনের সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, এই নির্বাচন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে। এই ভাঙন রোধ করতে হলে জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন। সরকার, নাগরিক সমাজ ও নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে এই জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে হবে।

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই নির্বাচনে ১৪৫ জন নিহত হয়েছে। আর আহত হয়েছে সাড়ে ১১ হাজার মানুষ।

সুজনের তথ্য মতে, ইউপি নির্বাচনে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩২ জন, ঢাকা বিভাগে ২৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ২০, বরিশাল বিভাগে ১৭ জন, জন, খুলনা বিভাগে ১৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। জেলাভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬৪টি জেলার সবটাতেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেছে ৪৬টিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *