Shadow

হোটেলে যাচ্ছে মৃত ছাগল!

জেলা সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকটি হাটে বিক্রি হচ্ছে মৃত ছাগল! আর এসব ছাগল স্বল্পমূল্যে কিনে নিচ্ছে রাজশাহীসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার অসাধু হোটেল-মালিকরা!

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এলাকার ছাগল-ব্যবসায়ী ও রাজশাহীর বড় মাপের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রোগে আক্রান্ত হয়ে মরে যাওয়া ছাগল বিক্রি করছে।

শীত-মৌসুমে গ্রামের বেশিরভাগ ছাগল বিভিন্ন ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এসব অসুস্থ ছাগল বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা গেলে সেগুলোর গলায় চালানো হচ্ছে ছুরি। পরে গোপনে প্লাস্টিকের বস্তায় করে হাটে নিয়ে ওজন দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। আর প্রথম দফায় সেগুলো কিনছে রাজশাহী থেকে ছোট-বড় ট্রাক নিয়ে আসা অসাধু ব্যবসায়ীরা। পরে সেগুলো চলে যাচ্ছে হোটেলে।

শিবগঞ্জ উপজেলার চামারহাটে গিয়ে দেখা মেলে মৃত ছাগলের গলাকাটা কয়েকটি দেহ। তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে আগেই পালিয়ে যায় রাজশাহী থেকে আসা প্রায় ২০টি মৃত ও গলাকাটা ছাগল বোঝাই একটি ট্রাক। পাওয়া যায় আপেল নামের এক ছাগল-ব্যবসায়ীকে। আটক করা হয় প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখা গলাকাটা চারটি ছাগলসহ তার (ঢাকা মেট্রো-ন ১৮-৮১৩৫) একটি ছোট ট্রাক। কিন্তু এলাকাবাসীর অনুরোধে ট্রাকটি ছেড়ে দেয়া হয়।

এ সময় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় ব্যবসায়ী আপেল জানান, গ্রামের ছাগল-ব্যবসায়ীরা জবাই করা ছাগল এনে দেয়। পরে রাজশাহীর বিভিন্ন খাবার হোটেলের লোকজন এসে গোপনে সেগুলো নিয়ে যায়।

শিবগঞ্জের চামারহাটে মৃত ছাগল ব্যবসায়ীদের একজন আপেল মিয়া

এ বিষয়ে কথা হয় হাটের ইজারাদার আলহাজ আমিনুর রহমান ও রায়হানের সঙ্গে। তারা বলেন, নিষেধ করা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা এগুলো চুপিচুপি কেনা-বেচা করছে।

তবে আগামী হাট থেকে ব্যবসায়ীদের এ ধরনের অবৈধ কাজ করতে দেবে না বলে জানিয়েছেন তারা।

শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাদিকুল বারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “গরু ও ছাগল যদি কোনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয় কিংবা বিষপানে মারা যায়, আর সেগুলো যদি কেউ খায় তাহলে আক্রান্ত পশুর রোগ বা বিষ মানবদেহেও প্রবেশ করে।”

শিবগঞ্জের বিভিন্ন হাটে মরা ছাগল বিক্রির ব্যাপারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার সরকার বলেন, “আমি এ বিষয়ে আগে কারও কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি। আপনাদের কাছ থেকে যেহেতু প্রথম শুনলাম তাহলে আমি আগামী হাটগুলোতে অভিযান চালাবো। যদি কেউ হাতেনাতে ধরা পড়ে তবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা করবো।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *